প্রথম ৪ দফা নির্বাচনেই বিজেপি তৃণমূলকে চার ছক্কা মেরে মাঠের বাইরে বের করে দিয়েছে। হয়ে যাওয়া ৪ দফা নির্বাচনে বিজেপি সেঞ্চুরি করে নিয়েছে। সোমবার বর্ধমানের তালিতের কাছে সাই কমপ্লেক্সে পূর্ব বর্ধমান জেলার পঞ্চম ও ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে এসে এভাবেই রাজ্যের শাসকদলকে তুলোধোনা করে গেলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি আসনের সমস্ত বিজেপি প্রার্থীরাই এদিন মঞ্চে হাজির ছিলেন। হাজির ছিলেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুরেন্দ্রজিত সিংহ অহলুবালিয়া, জেলার দুই সভাপতি অভিজিত তা, কৃষ্ণ ঘোষ প্রমুখরাও। হাজির ছিলেন রাজ্য বিজেপির কয়েকজন কর্মকর্তাও।

এদিন দুপুর ১২টা ১৫ নাগাদ মোদি সাই কমপ্লেক্সের মঞ্চে হাজির হন। ১২টা ৫৩ মিনিটে তিনি মঞ্চ ছেড়ে রওনা দেন কল্যাণীর জনসভার উদ্দেশ্যে। কাঠফাটা রোদে আগত মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য সাই কমপ্লেক্সের মাঠে তৈরি করা হয়েছিল ৩টি বিশালাকার ছাউনি। মোদির ভাষণ শুনতে এদিন এই তিনটি ছাউনি উপচে কেবলই লোকের মাথা। বর্ধমান-সিউড়ি এনএইচ ২বি রোডে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। যা দেখে রীতিমত উজ্জীবিত হয়ে উঠলেন বিজেপির কর্মকর্তারা। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বারবার মোদি বলেছেন, দিদি কেন দলিতদের অসম্মান, অপমান করছেন। এতবড় মহাপাপ কেন করছেন তিনি। বাংলার মানুষ তাঁকে ক্ষমা করবেন না। মোদি বলেন, তপশীলি, দলিত সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করে তিনি সবথেকে বড় ভুল করেছেন। মোদি অভিযোগ তুলেছেন, আম্বেদকরের জন্মদিনে আম্বেদকরকে অপমান করেছেন দিদি। বাংলার মানুষ তাঁকে ক্ষমা করবেন না। বাকি ৪ দফা নির্বাচনে বাংলা থেকে দিদিকে হঠিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে।

এদিন মঞ্চে এসেই মোদি বলেন, বর্ধমানের সবথেকে বিখ্যাত চাল আর মিহিদানা। গোটা বর্ধমানের সমস্ত ক্ষেত্রেই ছড়িয়ে রয়েছে মিষ্টি সুবাস। এই মাটি শিবের মাটি। মোদি বলেন, বাকি ৪ দফা নির্বাচনে তৃণমূল পুরো সাফ হয়ে যাবে। নন্দীগ্রামে দিদিকে বাংলার মানুষ ক্লিন বোল্ড করে দিয়েছে। বাংলায় দিদির আয়ু শেষ হতে চলেছে। মোদি এদিন বলেন, দিদির স্বপ্ন ছিল ভাইপোকে ক্ষমতায় বসাবেন। কিন্তু দিদির সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। বাংলার মানুষ, তোলাবাজ, সিণ্ডিকেট রাজকে খতম করবে এই একুশের ভোটেই। মোদি এদিন বলেন, দিদির এত রাগ কেন, কেন এত ক্রোধ – ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দিদি গাল দিতে চাইলে যত খুশি মোদিকে দিন। কিন্তু বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় কেবল মোদি মোদি শুনে রেগে যাচ্ছেন দিদি। মোদি এদিন বলেন, বাংলায় পুলিশকে তৃণমূলের পার্টির কাজে লাগিয়েছেন দিদি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে পুলিশ আর প্রশাসন নিজের নিজের কাজ করবে। সরকারের সুফল সরাসরি উপভোক্তার কাছেই পৌঁছাবে। কোনো দাদা-দিদির হাত দিয়ে পৌঁছাবে না। তিনি বলেন, বাংলায় যেদিন বিজেপি ক্ষমতায় বসবে তারপরই প্রধানমন্ত্রী কিষাণনিধি বাংলায় চালু হয়ে যাবে। কৃষকরা এককালীন ১৮ হাজার টাকা করে পেয়ে যাবেন। কোচবিহারের শীতলকুচির প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেন, মায়ের কোল থেকে ছেলে ছিনিয়ে নিয়েছেন, বয়স্কা মহিলা শুভা মজুমদার থেকে বাংলায় কাজ করতে আসা পুলিশ অফিসারকেও পিটিয়ে মারা হচ্ছে – কি চলছে বাংলায়। দিদি বাংলার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাই আগামী ২ মে দিদি যাচ্ছেনই। প্রতিষ্ঠিত হবে সোনার বাংলা।


Like Us On Facebook