বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার বেড়ুগ্রামে শুক্রবার রাতে এক ব্যক্তির রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ালো। মৃত ব্যক্তির নাম গোপাল পাল(৬০)। বাড়ি বেড়ুগ্রামের দক্ষিণপাড়ায়। শাসপুর-বর্ধমান রুটের বহড়াগড়িয়া দিঘিরপাড় এলাকায় তাঁর একটি মিষ্টির দোকান রয়েছে। বিজেপির দাবি,গোপালবাবুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আর বিজেপির এই দাবিকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনা সৃষ্টি হল গোটা এলাকায়। শনিবার সকাল থেকেই গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে গ্রামে। ঘটনার খবর পেয়েই বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সস্ত্রীক ছুটে আসেন বর্ধমান হাসপাতালের পুলিশ মর্গে। এই ঘটনায় তিনি ফরেন্সিক তদন্তেরও দাবি করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল খুনের রাজনীতি করছে। বিজেপি চুপ করে বসে থাকবে না। রাজনৈতিকভাবেই এর মোকাবিলা করা হবে।
বিজেপির অভিযোগ, শুক্রবার গ্রামে বিজেপির পতাকা খুলে ফেলা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এব্যাপারে খণ্ডঘোষ থানায় দফায় দফায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ কোনে অভিযোগ নেয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ভাইয়ের নেতৃত্বে এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি করা হয়। ফলে সন্ধ্যা থেকেই বাজার এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু গোপালবাবু নিজের দোকানেই অর্ডার থাকায় মিষ্টি তৈরি করছিলেন। রাত্রি প্রায় ১০টা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করার সময় আচমকাই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। কেউ কেউ বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বললেও বিজেপির দাবি, সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবেই গোপালবাবুকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনার পরই উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। শনিবার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে,খবর পেয়ে মর্গে ছুটে আসেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ, বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী, জেলা নেতা আইনুল হক, গোলাম জার্জিস প্রমুখরাও। এদিকে, এই গোপালবাবুর রহস্যমৃত্যুকে বিজেপি খুন বলে দাবি করলেও মৃতের ছেলে সঞ্জয় পাল এবং মেয়ে সাধনা পাল জানিয়েছেন, তাঁর বাবা সরাসরি রাজনীতি করতেন না। এমনকি গোপালবাবুকে খুন করা হয়েছে বলেও তাঁরা বলতে পারেননি। সাধনা পাল জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তাঁরা বুঝতে পারছেন না কিভাবে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ছেলে সঞ্জয় পাল জানিয়েছেন, যেহেতু তিনি নিজে দেখেননি বা কেউই দেখেননি কিভাবে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে তাই খুন না অন্যকিছু তা তিনিও বলতে পারছেন না। অন্যদিকে, এব্যাপারে খণ্ডঘোষের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলাম জানিয়েছেন, একজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে দোকানের মধ্যেই। কিভাবে মৃত্যু হল পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনে সম্পর্ক নেই।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?