‘ডেঙ্গু ব্যাটিং শুরু করায়, বর্ধমান পুরসভাও ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আইপিএল খেলতে শুরু করেছে’। ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে এভাবেই বক্তব্য রাখলেন বর্ধমান পুরসভার পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত। মঙ্গলবার থেকে গোটা জেলা জুড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া প্রভৃতি মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে গাপ্পি, গাম্বুজ এবং তেচোখো মাছ ছাড়ার ব্যাপক কর্মসূচি শুরু হল। এদিন বর্ধমান পুরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোট ৪০ হাজার মাছ ছাড়া হল।
পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত জানিয়েছেন, এখনও সেই অর্থে ডেঙ্গুর সময় নয়। কিন্তু ইতিমধ্যেই ডেঙ্গু ব্যাটিং শুরু করেছে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে বর্ধমান পুরসভাও অলআউট আইপিএল ম্যাচ শুরু করে দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি বাড়ি বাড়ি পুরসভা কড়া নাড়ছে। জমা জল বার করে দেওয়ার পাশাপাশি বড় বড় হাইড্রেন এবং মশার আঁতুরঘর – বিভিন্ন নোংরা জমা জল এলাকায় এই মাছ ছাড়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, একদিকে মশা মারতে কামান দাগা, অন্যদিকে বায়োলজিক্যাল পদ্ধতিতে এই মশার বংশ ধ্বংস করার জন্য মাছ ছাড়ার কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। পুরপতি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বর্ধমান পুর এলাকায় মোট ৩জনের রক্তে ডেঙ্গু পজিটিভ পাওয়া গেছে। তাই তাঁরাও সতর্ক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, এদিন জেলা মৎস্য দপ্তরের আধিকারিক ডঃ দেবাশীষ পালুই জানিয়েছেন, গোটা জেলা জুড়ে ২৩টি ব্লক এবং ৬টি পুরসভা এলাকাতেই এই গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে। পুর এলাকায় ৪০ হাজার এবং প্রতিটি ব্লকে ২০ হাজার করে মাছ ছাড়া হবে। মোট প্রায় ৭ লক্ষ মাছ ছাড়া হচ্ছে। অপরদিকে, বর্ধমান জেলা ডেপুটি স্বাস্থ্যাধিকারিক (ডেঙ্গু) সুনেত্রা মজুমদার জানিয়েছেন, গত ৩ মাস তথা মে মাস পর্যন্ত গোটা জেলায় মোট ৬৪জনের রক্তে ডেঙ্গু পজিটিভ পাওয়া গেছে। গতবছর এই সময়ে ৩০০ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ১৫টি পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল। এবারে এখনও পর্যন্ত ১২০০ রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, পরিসংখ্যান অনুসারে এখনও পর্যন্ত কাটোয়া মহকুমা এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি। তবে তিনি জানিয়েছেন, গতবারের থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার তাঁরা অনেক আগে থেকেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে নেমেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সরকারি হিসাবে গতবছর গলসি ১নং ব্লকে মাত্র একজনের ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল। এবারে তাঁরা অনেকটাই সচেতন রয়েছেন। জেলাশাসকের পৌরোহিত্যে প্রতি ১৫দিন অন্তর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে তাঁরা বৈঠক করছেন। কোথায় কোথায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, কেন বাড়ছে, কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় প্রভৃতি বিষয় নিয়ে চুলচেরা আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।