শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ জনবহুল বর্ধমানের জোতরামে ১৯নং জাতীয় সড়কের ধারে সোনার দোকানে ছিনতাই করতে এসে বাধা পাওয়ায় দোকানদারকে গুলি করে পালালে এক দুষ্কৃতি। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। সম্প্রতি দুর্গাপুরের কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা-কে আমড়া বাজার এলাকায় গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতিরা। সেই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। আর সেই ঘটনার পর শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ সোনার দোকানে লুঠ করতে এসে বাধা পাওয়ায় গুলি চালিয়ে দুষ্কৃতি পালিয়ে যাওয়ায় রীতিমত আতঙ্ক তৈরী হয়েছে জোতরাম এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
স্থানীয় বস্ত্র ব্যবসায়ী বিশ্বজিত চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, এদিন সকাল প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ আচমকা তিনি একটি গুলির আওয়াজ শুনে দোকান থেকে বেড়িয়ে এসে দেখেন, তাঁর দোকানের পাসে জল্পনা জুয়েলার্সের মালিক সদীপ দাস ওরফে খোকন দাস এক ব্যক্তিকে পিছন থেকে জাপটে ধরেছেন। আর কালো প্যান্ট সাদা জামা পড়া ওই ব্যক্তি নিজেকে ছাড়িয়ে নেবার প্রাণপন চেষ্টা করছেন। খোকন দাসের শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এটা দেখেই তিনি ছুটে যান। ততক্ষণে ওই দুষ্কৃতি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ছুটে পালাচ্ছে। তিনিও পিছনে পিছনে ছুটতে থাকেন। বিশ্বজিতবাবু জানিয়েছেন, তিনি ওই দুষ্কৃতিকে ধাওয়া করেন। এমনকি তাঁকে লক্ষ্য করে একটি ইঁটও ছোড়েন। ইঁট দুষ্কৃতির পিঠে লাগে। সেই সময় ঘুরে দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে পিস্তল তাক করলে তিনি ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসেন। সেই সময় ছুটে পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতি। এরপরই খোকন দাসের আর্ত চিৎকারে ছুটে আসেন তাঁর কাছে। দ্রুততার সঙ্গে খোকন দাসকে প্রথমে অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং পরে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা চলছে।
বিশ্বজিতবাবু জানিয়েছেন, পরে তিনি শুনেছেন মোটরবাইক নিয়ে আরও একজন অপেক্ষায় ছিল। পরে দু’জন মোটরবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে এই শ্যুট আউটের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় শক্তিগড় থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি কার্তুজের খোল এবং দুষ্কৃতির জুতো পুলিশ উদ্ধার করেছে। বিশ্বজিতবাবু জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন ওই দুষ্কৃতি খোকন দাসের দোকানে একাই আসে এবং সোনারূপার দাম নিয়ে কথা বলতে থাকে। এই সময়ই সম্ভবত সোনা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে সে। আর তাতে বাধা দিতেই পয়েণ্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে খোকন দাসের পেটে গুলি চালায় দুষ্কৃতি। কিন্তু তাতেও না দমে খোকন দাস তাঁকে জাপটে ধরে কাবু করার চেষ্টা করেন। এদিকে, প্রকাশ্য দিবালোকে এই শ্যুটআউটের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।