সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় নির্মম ভাবে পিটিয়ে খুন করা হল এক আদিবাসী ব্যক্তিকে। সোমবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার শ্রীখণ্ড ধোপাপুকুর আদিবাসী পাড়ায়। রাতেই কাটোয়া থানার পুলিশ বছর ৫৬ বছর বয়সী নরেণ মুর্মুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গা ঢাকা দিয়েছে মোড়ল বিহারি হাঁসদা। ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এক মহিলা সহ সাত জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। থমথমে হয়ে রয়েছে গোটা এলাকা।
শ্রীখণ্ড ধোপাপাড়ার আদিবাসী মহল্লার সকল বাসিন্দা ক্ষেতমজুরের কাজ করেন। এই আদিবাসী পাড়াতেই বসবাস মধ্যবয়স্কা ক্ষেতমজুর ববিতা হাঁসদা ও তাঁর পরিবারের। নরেণ মুর্মু তাঁদেরই প্রতিবেশী। এই মহিলা অভিযোগ তোলেন নরেন মুর্মু তাঁর সঙ্গে অশালিন অচরন করেছেন। গত শনিবার নরেণের বিরুদ্ধে ববিতা অভিযোগ জানায় গ্রামের মোড়ল বিহারি হাঁসদা ওরফে জ্যোতিষ এর কাছে। এই অভিযোগের বিচারের জন্য সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামে সালিশি সভার ডাক দেয় মোড়ল। মোড়লের নির্দেশ অমান্য করে সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় নরেন মুর্মুকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
কাটোয়া থানায় দায়ের করা অভিযোগে নরেণের স্ত্রী শুকি মুর্মু জানিয়েছেন, সালিশি সভায় যোগ না দেওয়ায় মোড়লের নির্দেশে পড়ার কয়েকজন সোমবার রাতে জোরপূর্বক তাঁর স্বামীকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করে নিয়ে যায়। লাঠি, রড ও শাবল দিয়ে তাঁর স্বামীকে নির্মম ভাবে মরধর করে। মাথা কার্যত থেঁতলে দেয়। ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে তাঁর স্বামী। তাকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। মারধর করে স্বামীকে প্রাণে মারার ঘটনায় জড়িত ১০ জনের নামে শুকি মুর্মু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
কাটোয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মোড়ল পলাতক। তার খোঁজ চলছে। এই ঘটনায় সাত জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।