নিজেকে নাসার বিজ্ঞানী বলে পরিচয় দিয়ে চাকরির নামে বেকারদের কাছ থেকে অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে বুধবার তীব্র উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমানের তিনকোনিয়া বাসস্ট্যাণ্ড এলাকার একটি অনুষ্ঠান ভবনে। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচাতে পুলিশ আটক করল রণজিত কুমার হাজরা নামে ওই ব্যক্তিকে।
এদিন ওই সভাঘরে নেভারল্যাণ্ডস এফডিআই পিআরডি অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন নামে একটি সংস্থা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। প্রায় ১৩০ জন রক্তদান করেন। এই অনুষ্ঠানেই নিজেকে নাসার একজন বিজ্ঞানী, ভারত সরকারের এবং সার্ক ভুক্ত দেশগুলির অন্যতম উপদেষ্টা বলে নিজেকে জাহির করেন রণজিত হাজরা নামে ওই ব্যক্তি। রক্তদান শিবিরের পাশাপাশি কয়েক হাজার পুরুষ মহিলার উপস্থিতিতে নিজেকে বিশ্বপিতা বলেও দাবি করেন।
এই অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন উদ্যোক্তারা। আর সেখানেই এসবের পিছনে চাকরি চক্রের গোপন ছক ফাঁস হয়। বাঁকুড়ার জয়রামবাটির মসিনাপুরের বাসিন্দা বাপিচরণ দাস অভিযোগ করেন, তিনি তাঁর বিভিন্ন আত্মীয়দের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা দিয়েছেন এই সংস্থার কর্মকর্তা কার্তিক রুইদাসকে। তাদের রেলে চাকরি করে দেবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ভূয়ো ওয়েবসাইটে তাদের নামের প্যানেলও প্রকাশ করা হয়। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখেই তাদের নিয়োগপত্র দেবার কথাও ছিল।
এব্যাপারে রণজিত হাজরা জানিয়েছেন, তিনি নাসার বিজ্ঞানী। যদিও তিনি কোনো প্রমাণই দাখিল করতে পারেননি। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তপশীলি জাতি, উপজাতিদের নিয়ে বিজ্ঞান সম্মতভাবে তাঁর একটি গোপন চুক্তি হয়েছে। যা ভারত সরকার গ্রহণ করেছে। যদিও তিনি এব্যাপারেও কিছু প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি। এদিন সভায় আসা বেকার যুবক যুবতীরা জানিয়েছেন, তাঁদের জানানো হয়েছে তপশীলি জাতি ও উপজাতিদের কল্যাণার্থে একটি ফাণ্ড তৈরি করেছেন। সেই ফাণ্ডের টাকাই তাদের বেতন হিসাবে দেওয়া হবে। তাঁরা দাবি করেছেন, এভাবেই গোটা রাজ্য জুড়েই একটি চক্র তৈরি করে প্রায় ১২ হাজার বেকার যুবক যুবতীদের কাছ থেকে চাকরি দেবার নাম করে অর্থ আদায় করা হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনায় এদিন বর্ধমান থানার পুলিস জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে ওই ব্যক্তিকে।