শুক্রবার রাতে হাওড়ার ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় পারিবারিক শত্রুতাকেই দায়ী করলেন মৃতের বাবা দেবকুমার মণ্ডল। শনিবার তিনি রায়না থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তাঁর ছেলের খুনীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ১০ নাগাদ সব্যসাচী মণ্ডল তাঁর বন্ধু রাজবীর সিংকে নিয়ে একজন রাঁধুনি পার্থ সাঁতরা এবং গাড়ির চালককে নিয়ে নিজেদের পৈত্রিক ভিটে রায়নার দেরিয়াপুরের বাড়িতে আসেন। সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির ছাদে রান্নার কাজ চলছিল, সেখানেই ছিলেন সব্যসাচীবাবু। সঙ্গে তাঁর বন্ধুও ছিলেন। এই সময় সব্যসাচীবাবুর গাড়ির চালক সব্যসাচীবাবুকে নীচে ডাকেন কেউ তাঁর খোঁজ করছেন বলে। সব্যসাচীবাবু নিচে নামতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগে জানিয়েছেন দেবকুমারবাবু। এমনকি এলোপাথাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলেও অভিযোগ। এই সময় তাঁকে আটকাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন বন্ধু রাজবীর সিংও। পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় সব্যসাচীবাবুর।
দেবকুমারবাবু জানিয়েছেন, তিনি সব্যসাচীর বন্ধু রাজবীর এবং তাঁর জামাইয়ের কাছ থেকে এই ঘটনার খবর পেয়ে বর্ধমান হাসপাতালে ছুটে আসেন। লিখিত অভিযোগে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, এর আগেও সব্যসাচীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে হাওড়ার শিবপুর থানায় গত ৮ আগষ্ট মামলাও দায়ের হয়েছে ৪৩৬, ৫০৬, ১২০ বি এবং ৩০৭ ধারায়। দেবকুমারবাবু তাঁর লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর ভাই গৌরহরি মণ্ডল এবং তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা মণ্ডল, দুই পুত্র দীনবন্ধু মণ্ডল ও সোমনাথ মণ্ডল লোক লাগিয়ে সব্যসাচী মণ্ডলকে খুন করেছে। কিছুদিন আগে তাঁর ভাই ও ভাইয়ের পরিবারের লোকজন তাঁর হাওড়ার বাড়িতে বোমা মেরে সব্যসাচীকে খুন করার চেষ্টা করেছিল বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, এই খুনের ঘটনায় পুলিশ সব্যসাচীবাবুর বন্ধু রাজবীর সিং, রাঁধুনি ও গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। অভিযোগকারী দেবকুমার মণ্ডলও পুলিশকে জানিয়েছেন, সব্যসাচীবাবু যাঁদের সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তাঁরাও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। অন্যদিকে, এই ঘটনার পর শনিবার সকালে বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিনহা রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। যদিও তদন্তের স্বার্থে তিনি কিছু বলতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ‘সিট’ গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ফরেন্সিক টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সুপারি কিলার নিয়োগ করা হয়েছিল কিনা এবং সেক্ষেত্রে টাকা পয়সার লেনদেন করা হয়েছে কিনা সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।