২০২৩-এর মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে জয়জয়কার পূর্ব বর্ধমান জেলার। গোটা রাজ্যে ১১৮জন প্রথম দশে স্থান পেয়েছে, তার মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই রয়েছে ১৬জন। এর মধ্যে আবার রীতিমত নজীর গড়ল বর্ধমানের ঐতিহ্যশালী স্কুল বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাইস্কুল। এই স্কুল থেকেই এবার ৭জন প্রথম দশে স্থান অর্জন করেছে। এছাড়াও বর্ধমান শহরের সিএমএস হাইস্কুলের ২জন প্রথম দশে স্থান পেয়েছে। গোটা রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রথম স্থান অধিকারীও পূর্ব বর্ধমান জেলার। প্রথম স্থান অর্জন করেছে কাটোয়ার দুর্গাদাসী চৌধুরাণী হাইস্কুলের ছাত্রী দেবদত্তা মাঝি। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৭। এরপরেই রাজ্যে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী শুভম পাল পেয়েছে ৬৯১।
শুক্রবার সকালে ফলাফল ঘোষণা হতেই বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের হাউসিং কমপ্লেক্সের বাসিন্দা সমীর পালের ফ্ল্যাটে উপচে পড়ে ভিড়। কলকাতার একটি বেসরকারী সংস্থার হিসাবরক্ষকের কাজ করেন সমীর পাল। শুভমের মা বর্ধমানের রায়না থানার পাঁইটা স্কুলের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা। এই ফলাফলে পাল পরিবারে রীতিমত যখন খুশীর জোয়াড় সেই সময় ফ্ল্যাটের একটি ঘরে অসুস্থ অবস্থাতেও শুভমের শিক্ষাশুরুর মূল কারিগর প্রায় ৭৭ বছরের নিরুপমা পালের চোখ দিয়ে তখন ঝরছে আনন্দাশ্রু। কারণ এই নাতি শুভমকে তিনিই হাতে ধরে অ, আ, ক, খ শিখিয়েছেন।
নিরুপমাদেবী জানিয়েছেন, তিনি অত্যন্ত খুশী নাতির এই ফলাফলে। ভবিষ্যতে সে নিজে থেকে যা হতে চায় তাই হোক। শুভম জানিয়েছে প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত সে বর্ধমানের সিএমএস হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছে। পঞ্চম শ্রেণী থেকে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলে পড়ছে সে। ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া। পূর্বস্থলীর পারুলিয়ার বাসিন্দা সমীরবাবুরা কর্মসূত্রে বর্ধমানে এসে ওঠেন। শুভম জানিয়েছে, পড়াশোনার বাইরে অবসর সময়ে সে গোয়েন্দা গল্প পড়তে ভালবাসে। ভালবাসে ক্রিকেট খেলা। প্রিয় খেলোয়াড় এম এস ধোনি। প্রিয় গায়ক অরিজিত সিং। শুভম বাংলায় পেয়েছে ৯৯, ইংরাজীতে ৯৬, অংকে ১০০, পদার্থবিজ্ঞানে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ১০০, ইতিহাসে ৯৬ এবং ভূগোলে পেয়েছে ১০০। মাধ্যমিকে ভাল ফলাফলের জন্য ছাত্রদের প্রতি তার বার্তা – টেক্সট বইকে ভালভাবে পড়তে হবে তাহলেই মিলবে ভাল ফল।