গত সাত মাসে ১১ জন মহিলাকে খুনের চেষ্টা করে ৫ জন মহিলাকে খুন করার পর ফের শিকারে বেরিয়ে রবিবার দুপুরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল কালনার সিরিয়াল কিলার কামরুজ্জামান সরকার (৪৭)। ধৃতকে হেফাজতে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সোমবার পুলিশ তাকে কালনা আদালতে তোলে। গত কয়েকমাসে কালনা মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় গলায় চেন পেঁচিয়ে একাকী মহিলাদের খুন এবং খুনের চেষ্টা করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। রবিবার এক সিভিক ভলান্টিয়ারের তৎপরতায় ওই সিরিয়াল কিলার ধরা পড়ায় পুলিশও হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।
ঠান্ডা মাথার খুনি কামরুজ্জামানের আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদ হলেও তিনি বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানর সমুদ্রগড়ে রেললাইনের ধারে টিনের চালের বাড়িতে থাকতেন। বাড়িতে তিন সন্তান ও স্ত্রী রয়েছেন বলে জানা গেছে। টিনভাঙা-লোহাভাঙার ব্যবসা করলেও নিজেকে নির্মাণ ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিতেন এলাকায়। রবিবার ধরা পড়ার পর অভিযুক্তকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা গেছে, হামলার আগে মোটর সাইকেলে এলাকায় রেইকি করতেন অভিযুক্ত সিরিয়াল কিলার। কখন বাড়িতে মহিলা একা থাকছেন তা বুঝে নিয়ে হামলা চালাতেন তিনি। ইলেকট্রিক মিটার দেখার নাম করে বাড়িতে ঢুকে অপারেশন শুরু করতেন কামরুজ্জামান। চেন দিয়ে গলা পেঁচিয়ে লোহার রড মাথায় মেরে খুন করতেন মহিলাদের। মহিলাদের খুন করার পর মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্কও করতেন অভিযুক্ত সিরিয়াল কিলার।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জী জানান, অভিযুক্ত ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত ১১ জন মহিলাকে খুনের চেষ্টা করে। তার মধ্যে পাঁচটি ক্ষেত্রে সফলও হয় সে। অভিযুক্ত খুনের পর হাতের কাছে যা কিছু পেত নিয়ে দ্রুত চম্পট দিত ঘটনাস্থল থেকে। ধৃতের কাছ থেকে লোহার চেন, লোহার রড সহ প্রচুর ইমিটেশনের গহনা উদ্ধার হয়েছে। আমরা চেন পেঁচিয়ে খুনের বিভিন্ন ঘটনাগুলি থেকে কিছু যোগ সূত্র পাই। একাধিক ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে একটি লাল বাইকে লাল হেলমেট পরিহিত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়। এরপরই কালনা থানার পুলিশ সাফল্য পায়।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?