পুলিশের হোমগার্ডে চাকরি দেবার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে বর্ধমান জেলা পুলিশ গ্রেফতার করল মূল পাণ্ডা সহ তাঁর ৩ সাগরেদকে। ধৃতদের নাম রাজেন হাজরা, সত্যজিত বিত্তর, সেখ জানারুল ওরফে পিণ্টু এবং নাজেম মল্লিক। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রায়নার ভাগাবাটিপুরের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য পোড়েল নামে এক যুবক রায়না থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সোমবার রায়না থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে এই চাকরি চক্রের মূল পাণ্ডা রাজেন হাজরাকে। গ্রেফতার করা হয় তাঁর সঙ্গী বাকি তিনজনকেও। এদের মধ্যে রাজেনের বাড়ি বর্ধমানের রায়ান গ্রামে। বাকিদের মধ্যে সত্যজিতের বাড়ি শক্তিগড় থানার কাণ্টিয়া গ্রামে, সেখ জানারুলের বাড়ি বর্ধমান শহরের বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ার বাথানপাড়ায় এবং নাজেম মল্লিকের বাড়ি জামালপুর থানার জানকুলি গ্রামে।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, রাজেন হাজরা নিজেকে হোমগার্ডের একজন অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনকে হোমগার্ডে চাকরি করে দেবার নাম করে প্রতারণা চক্র চালিয়ে যাচ্ছিল। এখনও পর্যন্ত তাঁরা জানতে পেরেছেন ৫ জনের কাছ থেকে হোমগার্ডে চাকরি দেবার নাম করে সে মোট প্রায় ১৮ লাখ টাকা নিয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ধৃতদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের চেকবই, ডেবিট কার্ড, পুলিশের লোগো যুক্ত প্যাড, রাবার স্ট‌্যাম্প বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে যেগুলি সবই জাল। এছাড়াও ধৃতদের ব্যবহৃত একটি চারচাকা গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এদের মধ্যে দলের পাণ্ডা রাজেন হাজরাকে পুলিশী হেফাজতে নিয়ে তাঁরা আরও তদন্ত চালাবেন। একইসঙ্গে এদের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত এবং কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তা জানার চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে, জানা গেছে, রায়না থানার ভাগাবাটিপুর এলাকার বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য পোড়েলকে হোমগার্ডে চাকরি করে দেবার নাম করে ৫ লক্ষ টাকা চায় রাজেন। তাঁর কথায় বিশ্বাস করে বাপ্পাদিত্য গত ২৫ জুন ৩ লক্ষ টাকা, মাধ‌্যমিকের অ্যাডমিট এবং মার্কসিট দেয় রাজেনকে। বাপ্পাদিত্য কার অধীনে তাঁর চাকরি হচ্ছে সেই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করার আবেদন জানায় রাজেনকে। কিন্তু রাজেন তা করতে না পারায় সন্দেহ সৃষ্টি হয় বাপ্পাদিত্যর। এরপরেই তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। আর তারপরেই তিনি রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

Like Us On Facebook