শনিবার থেকে বর্ধমানে শুরু হয়েছে খাদ্য মেলা। সেই মেলায় এবার রীতিমত হটকেক বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা আসামিদের হাতে তৈরি বিরিয়ানী আর চিকেন চাপ। রান্না থেকে পরিবেশন করছেন বর্তমানে সংশোধনাগারের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দীরাই। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই। বিরিয়ানী ১২০ টাকা ও চিকেন চাপ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। চিলি চিকেন ৩ পিসের দাম ৫০ টাকা। প্যারোলে মুক্তি পাওয়া এই জেল বন্দীদের সবসময় নজরে রাখছেন সাদা পোশাকের পুলিশ। রয়েছে গোপনে কড়া নিরাপত্তাও। সাজা শেষে যাতে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পারেন তাঁরা সেজন্যই বিগত কয়েকবছর ধরে রাজ্য কারা দপ্তর এই ধরণের আয়োজন করছে। কখনও নাটক, কখনও গান বাজনা, আবার কখনও এই ধরণের রান্নাবান্না। শনিবারই সন্ধ্যায় দমদম রেঞ্জের ডিআইজি নবীনচন্দ্র সাহা বর্ধমানের এই খাদ্য মেলার উদয়ন স্টলে আসেন। তিনি জানিয়ে যান, আমাদের শুধু খাবারের ব্যাপারটা নয় জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন রকম উদ্যোগ গ্ৰহণ করা হয়েছে তার মধ্যে এটা একটা। এদেরকে মানুষের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া সমাজে যাতে মূল স্রোতে ফিরতে পারে তারই একটা প্রচেষ্টা। সবার সঙ্গে এরা মিশবে কথা বলবে ফলে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়বে না এটাই মূল লক্ষ্য।
বর্ধমান রেঞ্জের ডিআইজি শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিভিন্ন সেন্ট্রাল, ডিস্ট্রিক্ট জেলে যেমন ক্যাণ্টিন আছে তেমনই বর্ধমান সেন্ট্রাল জেলে ‘উদয়ন’ নামে একটা ক্যাণ্টিন চলছে। এর লভ্যাংশের একটা অংশ বন্দীদের ওয়েলফেয়ার ফান্ডে জমা রাখা হয়। বাকিটা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন এই কাজের সাথে যুক্ত বন্দীরা। গত বছরও এই মেলায় স্টল দেওয়া হয়েছিল। বিরিয়ানি, চিকেন চাপ, চিকেন কষা, চিলি চিকেন, মিষ্টি-সহ বিভিন্ন আইটেম তৈরী করছেন বন্দিরা। গত বছর বিক্রি ভালোই হয়েছে। প্রতিদিন বিকাল ৫ টা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত ৪ জন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক এই স্টল সামলাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই মেলায় একদিন ৩জন মহিলা বন্দিদের সঙ্গে ৬ জন পুরুষ বন্দী নৃত্যনাট্যও করবেন।