সম্প্রতি আল কায়েদা জঙ্গী সন্দেহে রাজ্যে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার ঘটনায় ফের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে বর্ধমানের খাগড়াগড়ের ২০১৪ সালের অভিশপ্ত সেই স্মৃতি। বর্ধমান স্টেশনকে নিশ্চিন্ত করিডর বানিয়ে খাগড়াগড়ে জঙ্গী ডেরা তৈরি করেছিল জেএমবি সদস্যরা। ২০১৪ সালের দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং পরে ২ জঙ্গীর মৃত্যুর ঘটনায় গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়ে যায় আলোড়ন। এরপরই বর্ধমান স্টেশনকে আরও সুরক্ষিত করার দাবিও জোড়ালো হয়ে ওঠে। মাঝে মধ্যে স্টেশনে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং করার মত কিংবা পুলিস কুকুর দিয়ে তল্লাশি নেওয়ার কাজ করা হলেও তা যে নিতান্তই লোক দেখানো ব্যাপার হয়ে চলেছে তা বারবারই সমালোচিতও হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আইএস জঙ্গী বীরভূমের বাসিন্দা মহম্মদ মসিউদ্দিন ওরফে মুশাকে বর্ধমান স্টেশন থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আল কায়েদা জঙ্গীদের কাজকর্ম প্রকাশ্যে আসতেই নড়চড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় রেল কর্তৃপক্ষও।
গত প্রায় ১ বছর ধরেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে আরও যাত্রী নিরাপত্তা দিতে এবং সুরক্ষার প্রশ্নে পূর্ব রেল আইএসএস বা ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম চালু করে। আর তারই অঙ্গ হিসাবে এবার বর্ধমান স্টেশনেও বসল লাগেজ স্ক্যানার, ৭টি মেটাল ডিটেক্টর গেট এবং নতুন করে ৮০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। উল্লেখ করা যেতে, খাগড়াগড় কান্ডের পরই কয়েকবছর আগেই একটি লাগেজ স্ক্যানার আনা হয় বর্ধমান স্টেশনে। কিন্তু আচমকাই সেটিতে আগুন ধরে পুড়ে যায়। ফলে থমকে যায় বর্ধমান স্টেশনের নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টির কাজ। এরপর চলতি লকডাউন পর্বের মাঝেই ধাপে ধাপে শুরু হয়েছে এই সমস্ত অত্যাধুনিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ বসানোর কাজ। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পূর্ব রেল যাত্রীদের আরও নিরাপত্তা দিতেই এই আইএসএস চালু করেছে। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন যেগুলিতে প্রতিদিন যাত্রী যাতায়াত বেশি সেগুলিকেই প্রথম ধাপে নজর দেওয়া হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসাবে লাগেজ স্ক্যানার, সিসিটিভি ক্যামেরা বা মেটাল ডিটেক্টর মেশিন বসানো হচ্ছে।