হাইকোর্টের রায়ে পুজো মণ্ডপগুলিকে কন্টেনমেণ্ট জোন হিসাবে ঘোষণা এবং দর্শনার্থীদের মণ্ডপের ভেতর ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা জারী করার ঘোষণায় হতাশ পূর্ব বর্ধমান জেলার পুজো উদ্যোক্তারা। বর্ধমানের দুর্গাপুজো সমন্বয় কমিটির সম্পাদক রাজেশ সাউ জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায়ে রাজ্য সরকার কি নির্দেশ দেন – তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় কমবেশী প্রায় দেড় হাজারের কাছাকাছি বারোয়ারি পুজো হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই পুজোর মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে বেশ কিছু মণ্ডপে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬টি মণ্ডপের পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছেন। ফলে এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের এই রায়ে রীতিমত মুষড়ে পড়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
বর্ধমানের নাড়ী বেলবাগান এলাকার বারোয়ারি পুজো কমিটির সদস্য অনির্বাণ দে জানিয়েছেন, এটা তাঁদের কাছে হতাশা এনে দিল। বর্ধমানের লাল্টু স্মৃতি সংঘের সম্পাদক তন্ময় সামন্ত জানিয়েছেন, হতাশা ব্যঞ্জক সিদ্ধান্ত। প্রস্তুতি শেষ। তিনি জানিয়েছেন, মূর্তি সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করার পর থেকেই অল্প অল্প করে দর্শনার্থীরাও আসছিলেন। এমনিতেই করোনার জেরে দেরীতে কাজ শুরু হয়েছে। চারদিক খোলা রেখেই, স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করেই পুজোর আয়োজন করেছেন। কিন্তু কোর্টের রায় তো মানতেই হবে। তবুও তাঁরা সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন দর্শনার্থীদের দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হবে। পটের চিত্র থিমে প্রায় ৭ লক্ষ টাকার বাজেট রয়েছে ৫৯ বছরের লাল্টু স্মৃতি সংঘের পুজো।
অপরদিকে, সবুজ সংঘের সভাপতি নিশিকান্ত পাঁজা জানিয়েছেন, এখন যা পরিস্থিতি দাঁড়াল তাতে তাঁদের হৃদস্পন্দন শেষ। যে সমস্ত শিল্পীরা কাজ করছেন তাঁরা ভেঙে পড়েছেন। কারণ তাঁদের শিল্পীরা অধিকাংশই পরিযায়ী। এবারে ৯ লক্ষ টাকা বাজেটে ৩৭ তম বছরে তাঁদের থিম কিছু সময় তাঁদের সঙ্গে। এই থিমে লকডাউন এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েই গড়ে তোলা হয়েছে। সমস্ত করোনা বিধির সতর্কতা অবলম্বনও করা হয়েছে। তবুও কোর্টের নির্দেশ তো মানতেই হবে। তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে পুজোর আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে।