বীরভূমের মাধ্যমিক ছাত্র অরিজিত দাসের মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার গভীর রাত্রে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল আরও একজনকে। ডাক্তারবেশী অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের এসি মেকানিক সেখ সরফরাজ উদ্দিনের মোবাইল ফোনের কললিষ্ট খতিয়ে দেখে, তাকে সঙ্গে করেই বৃহস্পতিবার রাত্রে অভিযান চালায় পুলিশ। বর্ধমান শহরের বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমেই তারা হানা দেয়। পরে লাইফ কেয়ার নার্সিংহোমের টেকনিসিয়ান তোফাজ্জল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত তিনটে পর্যন্ত বর্ধমান থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায় পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। ধৃত সরফরাজউদ্দিনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, বীরভূমের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অরিজিত দাসকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার জন্য যখন অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজ চলছিল তখন বিকিই তারাবাবু শাহ নামে এক ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করে। তারাবাবু শাহ আবার এই লাইফ কেয়ার নার্সিংহোম এর টেকনিশিয়ান তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এর পর তোফাজ্জলের কথামতোই সরফরাজ উদ্দিনকে চিকিৎসক সাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা পাঠিয়ে দেয়। তদন্তে নেমে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ ভুয়ো চিকিৎসক শেখ সরফরাজ উদ্দিনের কললিস্ট খতিয়ে দেখে তোফাজ্জল হোসেনের মোবাইল নাম্বার পায়। তারপরেই বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে টেকনিশিয়ান তোফাজ্জলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে একটি ভারত সেবক সমাজ নামে একটি কার্ডও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই কার্ড অনুসারে সে ডিপ্লোমা ইন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ম্যানেজমেণ্টের প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাড়ি জামালপুর থানার সেলিমডাঙায়। উল্লেখ্য, অরিজিত দাসের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে সেদিনের অ্যাম্বুলেন্সের চালক তারাবাবু শাহ, ডাক্তারবেশী এসি মেকানিক শেখ সরফরাজউদ্দিন, অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের মালিক অনিমেশ মল্লিক ও ম্যানেজার সেখ রউল ইসলামকে। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হল এই চক্রের অপর পাণ্ডা সেখ তোফাজ্জেল হোসেনকে। যদিও এখনও অধরা অ্যাম্বুলেন্স চক্রের মূল পাণ্ডা বিকি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে লাইফ কেয়ার নার্সিংহোম থেকে টেকিনিসিয়ান তোফাজ্জেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় নার্সিংহোমের মালিক আনিসুর মণ্ডল জানিয়েছেন, তোফাজ্জল হোসেন নার্সিংহোমের আইসিইউয়ের টেকনিশিয়ান পদে নিযুক্ত ছিল। যাদবপুর থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। অন্যদিকে তদন্তকারী পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপনে এই তোফাজ্জলই চাহিদা মতো বিভিন্ন জায়গায় সরফরাজদের মতো ছেলেদের ডাক্তার সাজিয়ে পাঠাত। শুধু তাই নয় রেনেসাঁয় থাকার সুবাদে বিকি ওরফে বিজয়রামের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতার সুবাদে সমগ্র চক্র তারাই চালাত।