স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন স্বামী। মেয়ের বিয়ের আগের দিন তা দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার মেয়ের বিয়ে থাকায় সেই টাকা চাইতেই শুরু হয় বচসা। বচসার জেরে স্ত্রীকে নোড়া দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গুসকরা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর্বাশা পল্লী এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মহিলার নাম সন্ধ্যা ঘরুই (৪২)। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত স্বামী ছোটন সর্দার ওরফে ভজহরি সর্দার (৪৪)। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে আউশগ্রাম থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় নিহত মহিলার মেয়ে ইন্দ্রা ঘরুই তার সৎ বাবা ছোটনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে গুসকরা বিট হাউসে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যাদেবীর প্রথমে বিয়ে হয়েছিল বর্ধমানে। প্রথম পক্ষের তিন সন্তান। দুই মেয়ে এক ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে থাকে বর্ধমানে। বছর চারেক আগে প্রথম পক্ষের স্বামীকে ছেড়ে ছোটনকে বিয়ে করেন সন্ধ্যাদেবী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ছোটনের বাড়ি বীরভূমের লাভপুরে। সে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। সন্ধ্যাদেবী আগে পরিচারিকার কাজ করলেও বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার জন্য কাজ করতে পারতেন না। তবে তার মা তুলসি বর্গক্ষেত্র মাঝে মধ্যেই আর্থিক সাহায্য করতেন। নিহত মহিলার ছোট মেয়ে ইন্দ্রা থাকত তার মায়ের কাছেই। গুসকরা গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় তার বসার কথা। ইন্দ্রা জানিয়েছে তার বিয়ের ঠিক হয়েছে। মঙ্গলবার বর্ধমান থেকে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। রবিবার সে বর্ধমানে ছিল। এদিন সোমবার স্কুলে অ্যাডমিট কার্ড নিতে এসে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসে। তখন সে মায়ের মৃত্যুর খবর পায়। প্রতিবেশীরা এদিন জানিয়েছেন, রবিবার রাতে ছোটনের সঙ্গে সন্ধ্যাদেবীর খুব বচসা হয়। মেয়ের বিয়ের জন্য পাঁচ হাজার টাকা স্থানীয় একজনের কাছে ধার নিয়েছিলেন সন্ধ্যাদেবী। ওই টাকা স্ত্রীর কাছ থেকে ধার নেয় ছোটন। রবিবার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কারণ সোমবার সন্ধ্যাদেবীর ছেলের হাতে ওই টাকা পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা টাকা স্বামীর কাছে ফেরত চাইছিলেন সন্ধ্যাদেবী। তা নিয়ে রাতে ঝগড়া হয়। যদিও প্রতিবেশীরা রাতে ওই পারিবারিক বিবাদে হস্তক্ষেপ করেনি।
জানা গেছে সোমবার সকালে সন্ধ্যাদেবীর ঘরের দরজা খোলা না পেয়ে তাঁরা ডাকাডাকি করেন। তাতে সাড়া না পেলে দরজা ঠেলে ঘরে রক্তাক্ত থেঁতলানো দেহ দেখতে পান। পাশে পড়ে ছিল রক্তাক্ত নোড়াটিও। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।