বৃষ্টির দেখা নেই তার উপর বৈশাখের শুরুতেই বর্ধমানের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘুরছে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে বৈশাখে আরও গরম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, পাশাপাশি কালবৈশাখী নিয়েও কোন সতর্ক বার্তা নেই। আর এই গরমে বিয়ার প্রেমীরা বেশ হতাশ। মদের দোকানে বিয়ারের ‘দেখা নেই’। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও বিয়ারের বোতল বা ক্যান না মেলায় হতাশ হচ্ছেন বিয়ার প্রেমীদের একটা বড় অংশ।
আবগারি দফতরের সুপার এনায়েত রব্বির দাবি, জোগানে ঘাটতি নেই বললেই চলে। তবে গরমের জন্যে বিয়ারের চাহিদা বেড়ে গেছে। দফতর সূত্রে জানা গেছে, একটা নির্দিষ্ট নীতিতে যোগানের তারতম্য বজায় রাখার জন্যে প্রত্যেক সপ্তাহে আবগারি দফতর প্রত্যেকটি দোকানকে নির্দিষ্ট পরিমাণের বিয়ারের ‘কোটা’ করে দিয়েছে। সেই কোটাতে খরিদ্দারদের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না বলে দাবি সুরা-ব্যবসায়ীদের।
বর্ধমানের বড়বাজারের ব্যবসায়ী রত্নেশ্বর সিংহ রায়ের দাবি, বিয়ার দিতে পারছি না। খরিদ্দাররা ফিরে যাচ্ছেন। আরেক ব্যবসায়ী সনাতন সিংহের দাবি, গত বছর গাড়ি গাড়ি বিয়ার তুলেছিলাম। গাড়ি তো দূরের কথা এবার চাহিদার অর্ধেকও বিয়ার মিলছে না। আবগারি দফতরের সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় এপ্রিল-মে মাসে প্রতি সপ্তাহে ১৮-২০ হাজার ক্রেট বিয়ার লাগে। চলতি সপ্তাহে প্রায় একই যোগান দেওয়া হয়েছে। গত বছরের চেয়ে ৮-৯ শতাংশ বিয়ারের বিক্রিও বেশি হয়েছে।
মদ ব্যবসায়ীদের দাবি, অত্যাধিক গরমের জন্যে হঠাৎ বিয়ারের চাহিদা বেড়ে গেছে। দাম কমে যাওয়ার জন্যে সাধারণভাবেই বিয়ারের চাহিদাটা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। অনেক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, পর্যাপ্ত সরবরাহের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকার ফলে জানুয়ারির শেষ থেকেই বিয়ার কম আসছে। জেলার ৩১৩টি দোকানেই শীতের শেষে ভাল পরিমাণে বিয়ার মজুত থাকে। এ বার সেই মজুতও শেষ হয়ে যাওয়ায় দোকানে দোকানে বিয়ার বাড়ন্ত।
রাজ্য আবগারি দফতর সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হওয়ার জন্যেই গরমে বিয়ারের চাহিদা সামাল দিতে মুশকিল হচ্ছে। বিয়ারের জোগান কবে থেকে স্বাভাবিক হবে, সেটা আবগারি দফতরের কর্তারা বলতে পারছেন না। তবে বিয়ারের যোগান কম থাকায় বিদেশি মদের চাহিদা তুঙ্গে বলে জানা গিয়েছে। এপ্রিল মাসে ‘ফরেন লিকারের’ বিক্রি ২৯ হাজার লিটার বেড়েছে, যা মার্চ মাসের তুলনায় ২৩% বেশি। আবগারি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘শুধুমাত্র দোকানের হিসেবে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এক মাসে ২০ কোটি টাকারও বেশি মদ-বিয়ার বিক্রি হয়েছে।’