বৃহস্পতিবারের পর ফের শনিবার বর্ধমানের বিখ্যাত শক্তিগড়ের ল্যাংচার দোকানগুলিতে হানা দিল স্বাস্থ্যদফতর, জেলা পুলিশ, ক্রেতা সুরক্ষা দফতর ও লিগ্যাল মেট্রোলজি দফতর যৌথভাবে অভিযান চালায়। এদিন অভিযানের নেতৃত্ব দেন জেলার উপ-মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী ও ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিইবি) এ এস চ্যাটার্জী। এদিন এই হানাদারিতে প্রতিনিধিরা দেখেন, অধিকাংশ দোকানের রান্নাঘর এখনো অস্বাস্থ্যকর, মিষ্টির কড়াই আঢাকা, কারিগরদের কোন স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয় না। নেই সামান্য পরিচ্ছন্নতাও। কোথাও বা বিষাক্ত রং মেশানো হচ্ছে মিষ্টিতে। এছাড়াও অনেকগুলি দোকানের গুদামে হানা দিয়ে সাত-দশদিন আগে থেকে ভেজে রাখা, ফাংগাস পরে যাওয়া ল্যাংচা মেঝের উপর ডাঁই করে রাখা অবস্থায় দেখতে পান হানাদারি টিম।
প্রাথমিকভাবে এই টিমের অনুমান, এই সমস্ত বাসি মিষ্টি ২১ জুলাই পুনরায় ভেজে, রসে ডুবিয়ে বিক্রী করবার পরিকল্পনা ছিল। কারণ ২১ জুলাই বিভিন্ন জেলা থেকে গাড়িতে করে জাতীয় সড়ক ধরে বহু তৃণমূলকর্মী আসা-যাওয়া করেন এবং এরজন্য শক্তিগড়ে ল্যাংচার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। পরীক্ষার জন্য কয়েকটি নমুনা রেখে বাকী প্রায় তিন কুইন্ট্যাল এই ধরণের ভাজা ল্যাংচা আজ বাজেয়াপ্ত করে তা পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে দেওয়া হয়েছে। সাতজন দোকানদারকে আইনী নোটিশ ধরানো হয়েছে, কয়েকজনের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় ডায়েরীও করা হয়েছে। জানা গেছে, সমস্ত অসাধু দোকানদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ মামলা রুজু করা হচ্ছে। তাঁদের প্রত্যেকের দশ লক্ষ টাকা অব্দি জরিমানা ও সাত বছর পর্যন্ত হাজতবাস বা উভয়ই হতে পারে। এদিন ক্রেতাদের শক্তিগড়ে ল্যাংচা কেনার আগে যথেষ্ট সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যদফতরের আধিকারিকরা। একইসঙ্গে আজ রবিবার কলকাতামুখী ও কলকাতা ফেরৎ ক্রেতাদের স্বার্থে স্বাস্থ্যদফতরের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারী জারি রাখতে ফুড সেফটি অফিসারদের মোতায়েন করেছেন জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী।