হাতের কাছে অপরের ফেলে যাওয়া মোটা টাকা পেয়ে তা ফেরৎ দিয়ে সততার নজির গড়লেন এক চা দোকানের মালিক। শনিবার ব্যবসায়ী শ্রীমন্ত সাঁতরার এই মহানুভবতার সাক্ষী থাকলো পূর্ব বর্ধমানের রায়নার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দারা। টাকা ফেরৎ পেয়ে শ্রীমন্ত সাঁতরাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানোর কোন খামতি রাখলেন না ডাম্পার চালক বাপি বাগদি।
রায়নার গোপালপুর গ্রামে বসবাস শ্রীমন্ত সাঁতরার। বর্ধমান-আরামবাগ রোডে গোপালপুর মোড়ে তাঁর একটি ছোট্ট চায়ের দোকান আছে। সেখানে তিনি চা ও ঘুগনি মুড়ি বিক্রি করেন। বীরভূমের বোলপুর এলাকা নিবাসী ডাম্পার চালক বাপি বাগদি সেখান থেকে পাথর বোঝাই করে এদিন ডাম্পার নিয়ে তিনি শ্যামসুন্দর আসেন। শ্যামসুন্দরে পাথর বোঝাই ডাম্পার খালি করে বাপি বাগদি গোপালপুর আসে। শ্রীমন্তর চায়ের দোকানে সে চা খায়। তার গামছায় বাঁধা ছিল ৪৫ হাজার টাকা। চা খেয়ে ডাম্পার নিয়ে বাপি সেখান থেকে চলে যায়। পরে দোকানের বেঞ্চে গামাছায় বাঁধা কিছু পড়ে থাকতে দেখেন শ্রীমন্ত। গামছার ফাঁস খুলতেই চোখ কপালে ওঠে। শ্রীমন্ত বুঝতে পারেন কেউ তার দোকানে এই টাকা ফেলে গেছেন। স্বযত্নে তুলে রাখেন গামছায় বাঁধা টাকা।
শ্রীমন্ত সাঁতরা জানান অন্যান্য দিন বেলা ১২ টার মধ্যে তিনি দোকান বন্ধ করে দেন। যে টাকা ফেলে গেছে সে নিশ্চই ফেরৎ নিতে আসবে এমনটা ভেবে বেলা দেড়টা পর্যন্ত তিনি দোকান খুলে বসে থাকেন। স্থানীয়দের ঘটনার কথা জানান। বিকালের দিকে ডাম্পার চালক টাকার খোঁজ করতে করতে দোকানের সামনে এসে হাজির হয়। বাপি টাকা খোয়া যাবার কথা জানায় শ্রীমন্তকে। গ্রামবাসীদের ডেকে শ্রীমন্তকে গামছা সহ ৪৫ হাজার টাকা তুলে দেয় ডাম্পার চালক বাপি বাগদির হাতে। সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় শ্রীমন্তর এই মহানুভবতা।
ডাম্পার চালক বাপি বাগদি জানায়, টাকা ভর্তি গামছা খুইয়ে ফেলেছিলাম। চা দোকানদার আমার টাকা স্বযত্নে রেখে দিয়েছিলেন। শ্রীমন্তবাবু আমার সব টাকা ফেরৎ দিয়ে দিয়েছেন। টাকা না পেলে আমায় চরম সমস্যায় পড়তে হত। বাপি বাগদি জানায় এদিনকার ঘটনা থেকে একটা বিষয় নিশ্চিৎ হলাম এখনও শ্রীমন্তবাবুদের মত সৎ লোক সমাজে অাছে। ওনার সততা কোনদিনও ভোলার নয়। স্থানীয় বাসিন্দা অশোক সাঁতরা জানালেন এবারই প্রথম নয়। এর আগেও একই ভাবে অনেকের মোটা টাকা, মোবাইল ফোন পেয়েও ফেরৎ দিয়ে দিয়েছে শ্রীমন্ত। ও বরাবরই নিজের সততা বজায় রেখে চলেছে।