একদিকে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের জেরে মৃত্যুর সংখ্যা। অন্যদিকে, সাধারণ রোগীদের মৃত্যু – সব মিলিয়ে সকাল থেকে রাত বর্ধমানের নির্মলঝিল শ্মশানে দীর্ঘ লাইন। তারই মাঝে বন্ধ হয়ে রয়েছে গ্যাস চুল্লী। চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ। সবথেকে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে গ্যাস চুল্লী বন্ধ থাকায় কাঠে মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন শ্মশানযাত্রীরা। কারণ চলতি সময়ে মাঝে মাঝেই কালবৈশাখীর তাণ্ডবে নামছে অঝোর ধারায় বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে কাঠ। সেই ভিজে কাঠে মৃতদেহ পোড়ানোয় সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করছে।
উল্লেখ্য, এরই পাশাপাশি চালু রয়েছে ইলেকট্রিক চুল্লী। কিন্তু যেভাবে মৃতদেহের লাইন পড়ছে তাতে একটি ইলেকট্রিক চুল্লী এবং কাঠের চুল্লীতে দাহ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষ চাইছেন দ্রুত গ্যাস চুল্লীকে ঠিক করা হোক। বর্ধমান পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, করোনায় মৃত্যু বাড়তে থাকায় সন্ধ্যে ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ দাহ করার সময় ধার্য্য করা হয়েছে। অন্য সময়ে সাধারণ মৃতদেহ সৎকার করা হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ১০-১৫টি করে করোনায় মৃতদেহ আসছে। এদিকে, সমস্যা দেখা দিচ্ছে যে সমস্ত সাধারণ মৃতদেহ সন্ধ্যের পর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেগুলিকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এদিকে, এই বিষয়ে বর্ধমান পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত গুহ জানিয়েছেন, তাঁরা গ্যাস চুল্লীর মেরামতির কাজ দ্রুততার সঙ্গে করার চেষ্টা করছেন। আশা করছেন কয়েকদিনের মধ্যেই তা চালু করা যাবে। প্রসঙ্গত, তিনি জানিয়েছেন, নির্মলঝিল শ্মশান থেকে যাতে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায় সেজন্য নিয়মকরে কয়েকঘণ্টা অন্তর সেখানে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে, বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর নিজের বিধানসভা এলাকা রায়নায় দামোদরের ধারে একটি ইলেকট্রিক চুল্লী নির্মাণ করার কথা ঘোষণা করলেন রায়নার তৃণমূল বিধায়ক শম্পা ধাড়া। তিনি জানিয়েছেন, বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হলে তিনি ভেবেছিলেন এই ইলেকট্রিক চুল্লী তৈরী করবেন। তিনি জানিয়েছেন, রায়না এলাকায় কোন ইলেকট্রিক চুল্লী না থাকায় অনেককেই ত্রিবেণী বা বর্ধমানে যেতে হয়। তাই এই অসুবিধা দূর করতে তিনি একটি ইলেকট্রিক চুল্লী তৈরির উদ্যোগ নেবেন।