রেশনে মাল কম দেওয়া কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে জেলও হতে পারে রেশন ডিলারের। বৃহস্পতিবার বর্ধমান জেলা প্রশাসন, এমআর ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটর এবং রাইস মিল মালিকদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠকের শেষে একথা জানিয়ে গেলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরেই রেশনের মাল কম দেওয়া নিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসছিল। বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী ফের জানিয়ে দেন যাঁদের রেশন কার্ড আছে তাঁরা রেশন সামগ্রী পাবেনই। একইসঙ্গে রেশন নিয়ে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি সাফ জানিয়ে দেন ওজনের কারচুপি বা রেশন দ্রব্যের গুণগত মান নিয়ে কোন আপস চলবে না। রেশন ডিলাররা অসাধু কাজ করলেই তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাঁদের জেলও হবে। তিনি জানিয়েছেন, রেশনের দুর্নীতি বা অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু এদিন রীতিমত কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন প্রত্যেক পরিবারকে মুসুর ডাল দেওয়া হবে। অথচ এখনও পর্যন্ত নাফেডের মাধ্যমে মাত্র ১৮৪৭ মেট্রিক টন ডাল এসেছে। যেখানে রাজ্যের প্রয়োজন প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার মেট্রিক টন। খাদ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে রেশনের মাধ্যমে ৫ কেজি করে বিনামূল্যে চাল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। একইসঙ্গে শুরু হচ্ছে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজও। শুক্রবার থেকেই গোটা রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা সকাল ৮ টা থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত রাস্তায় থাকবেন। কড়া নজরদারী চলবে সর্বত্র। কোথাও কোনো ত্রুটি হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, এদিন রেশনের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলার ২৫টি রাইস মিলকে নিয়েও বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এই রাইসমিলগুলি সরকারকে প্রত্যাশিত চাল দিচ্ছিলেন না। তাই তাঁদের নিয়ে বসা হয়েছিল। তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগামী ১৫ মের মধ্যে সরকারের পাওয়া ১লক্ষ ৪০ হাজার মেট্রিক টন চাল মিলগুলি থেকে সরকারকে দিতেই হবে। এরই পাশাপাশি খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে আউশ, আমনের যে ধান চাষীরা লকডাউনের জেরে বিক্রি করতে পারেনি সেই ধান ছাড়াও বোরো ধান কেনা শুরু হচ্ছে। গোটা রাজ্যে এবছর ২০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য খাদ্য দপ্তর একটি পোর্টাল চালু করেছে। সংশ্লিষ্ট চাষীকে সেই পোর্টালে গিয়ে জানাতে হবে তিনি কত বস্তা ধান বিক্রি করতে চান। আর তা জানালেই খাদ্য দপ্তরের লোক তাঁর বাড়ি থেকেই ধান সংগ্রহ করবেন। করোনার জেরে এবারে আর ধান দাও চেক নাও -এর পদ্ধতি থাকছে না। পরিবর্তে ধানের দাম নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে চাষীকে দেওয়া হবে বলে এদিন জানিয়ে যান খাদ্যমন্ত্রী। এদিন তাঁর সঙ্গে এই বৈঠকে হাজির ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার সহ জেলাপরিষদের সভাধিপতি, জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসনের সমস্ত আধিকারিকরাও।

Like Us On Facebook