পূর্ব বর্ধমান জেলায় পাঁচটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনা নিল জেলা প্রশাসন। বর্ধমান, কালনা ও কাটোয়ায় এই পাঁচটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য দ্রুততার সঙ্গে জেলায় পাঁচটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ, কালনা গেট লাগোয়া কৃষি ভবনের কোভিড হাসপাতাল, কালনা ও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল সহ মোট পাঁচটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হবে। এই প্ল্যান্ট থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরাসরি রোগীর বেডের কাছে অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে।
রাজ্যের অন্যান্য অংশের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের হাহাকার চলছে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেন না পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেকেই। বেসরকারি অনেক নার্সিংহোমই চাহিদামতো অক্সিজেন পাচ্ছে না। অভাব রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডারেরও। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কালনা ও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি তেমন নেই। তবে প্রতিদিন শয়ে শয়ে বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন অক্সিজেন চাহিদা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই ঘাটতি মেটাতে আগেভাগেই প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
গত চব্বিশ ঘন্টায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৪৭৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৭৯৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদাও। আগামী দিনে এই চাহিদা যে আরও বাড়বে তা ধরে নিয়ে আপৎকালীন ভিত্তিতে পাঁচটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও রাজ্যের কাছে ৩০০টি সিলিন্ডার চেয়ে পাঠানো হয়েছে। অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। শিল্প ক্ষেত্রে ব্যবহৃত অক্সিজেন সংগ্রহ করে চিকিৎসা পরিষেবার কাজে লাগানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমানের দুটি প্ল্যান্টে মিনিটে হাজার লিটার ও কাটোয়া, কালনার প্ল্যান্ট দুটিতে মিনিটে ৫০০ লিটার করে অক্সিজেন উৎপাদন হবে। সেই অক্সিজেন পাইপ লাইনের মাধ্যমে রোগীর কাছে পৌঁছে যাবে। এই প্ল্যান্টগুলি চালু হয়ে গেলে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেনের ঘাটতি অনেকটাই কমে যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।