অতিবৃষ্টি আর বন্যাজনিত কারণে মাছের বাজারও চড়ছে। শুক্রবার থেকেই ক্রমশ পূর্ব বর্ধমান জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে জমা জল নামতে শুরু করেছে। একটু একটু করে ছন্দে ফিরতে চলেছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের সাধারণ জনজীবন। কিন্তু বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে দামের আগুন। একেই তো অতিবৃষ্টি ও বন্যাজনিত কারণে সবজির দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। তার ওপর এবার ক্রমশই বাড়তে শুরু করল মাছের বাজার। যদিও এই সময়েই প্রায় কমবেশি বর্ধমান শহর ও শহরতলির বাজারগুলিতে দেখা মিলেছে বেশ কিছু চুনোমাছের। কিছুটা হলেও তারই দাম এখন অনেকটাই আয়ত্বের মধ্যে। কিন্তু বাজারে বিশেষ করে সামুদ্রিক চালানি মাছের আমদানী কম হওয়ায় বাজারে মাছের জোগান দিতে দেশি মাছের দামও উর্ধমুখী।
বর্ধমান শহরের বিশিষ্ট মাছ ব্যবসায়ী অমর মোহন্ত জানান, চলতি এই পরিস্থিতিতে চালানি মাছের আমদানি অনেকটাই কমেছে। যেটুক আসছে বিশেষ করে অন্ধ্রের রুই কাতলা তার দামও রীতিমত বেড়েছে আমদানী কম হওয়ার জন্যই। গত সপ্তাহেও যেখানে এই চালানি মাছের দাম ছিল ১৩০-১৪০ টাকা প্রতি কেজি। এখন তাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০-১৮০ টাকা। সামুদ্রিক পমফ্রেট মাছের দাম প্রায় ২০০ টাকা কমবেশি বেড়েছে। তিনি জানান, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সামুদ্রিক মাছ অনেকটাই জোগান দেয়। কিন্তু এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য সামুদ্রিক মাছের আমদানি অনেকটাই কম। ফলে দেশি মাছের দাম বেড়েছে গড়ে ৫০-৬০ টাকা প্রতি কেজিতে।
মাছ ব্যবসায়ী কিশোর বাগ জানান, চলতি সময়ে মাছের বাজার আগুন হওয়ার মূলে আরও একটি অসুবিধা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ পুকুর, খাল, বিল জলে ভর্তি হয়ে যাওয়ায় জেলেদের মাছ ধরার ক্ষেত্রেও অসুবিধা হচ্ছে। ফলে অন্যান্য সময়ে যে ধরণের মাছের জোগান থাকে তা অনেকটাই কমেছে। তারই মাঝে আশপাশ এলাকা থেকে বর্ধমানের বাজারগুলিতে যে মাছ আসছে স্বাভাবিকভাবেই তার দামও বেশ চড়া। তিনি জানিয়েছেন, দেশি কাতলা মাছ বিকোচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকা প্রতি কেজিতে। দেশি রুই ২৩০-২৪০ টাকা প্রতি কেজিতে বিকোচ্ছে বিভিন্ন বাজারে।
বর্ধমানের তেতুঁলতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী কমলাকান্ত মণ্ডল জানান, বর্ধমানের এই বাজারে রিষড়া ও মেদিনীপুর থেকে চাষিরা মাছ নিয়ে আসেন। কিন্ত অতিবৃষ্টি ও বন্যা জনিত কারণে তাঁরা মাছ নিয়ে আসতে পারছেন না। ফলে মাছের জোগান কমেছে। তার জেরেই রীতিমত বাজারে টান পড়েছে মাছের। অপরদিকে, ট্যাংরা, শোল, ল্যাঠা বা বিভিন্ন চুনো মাছের দাম যা এতদিন নাগালের বাইরে ছিল এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য তার দাম অনেকটাই শিথিল হয়েছে। আগের তুলনায় এই মাছগুলির দাম কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা কমে মিলছে।