রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সন্তান স্নেহে লালন-পালন করে বছর ঘুরতেই সন্তানসম ‘মিষ্টু’-র জন্মদিনে মাতোয়ারা পূর্ব বর্ধমানের সোনাপলাশির ব্যানার্জী পরিবার। ছিল আত্মীয় স্বজনদের জন্য ভুড়ি ভোজের আয়োজন। প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে এক বছর আগে শান্তিময়ী ব্যানার্জী ও পার্থসারথী ব্যানার্জী রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখেন একটি টিয়া শাবককে। সেটিকে উদ্ধার করে পরম স্নেহে সেবা শুশ্রূষা শুরু করেন তাঁরা। পরে তাঁর আদুরে নাম রাখেন ‘মিষ্টু’। এইভাবেই ‘মিষ্টু’ হয়ে ওঠে পরিবারের একজন সদস্য। তাকে শান্তিময়ী ব্যানার্জী নিজের মেয়ে বলেই পরিচয় দিতে বেশী ভালোবাসেন। সেই দিনের ঘটনার বছর ঘুরতেই ‘মিষ্টু’র জন্মদিন পালন হল ধূমধাম করে। রবিবার বর্ধমান ২নং ব্লকের সোনাপলাশি গ্রামের ব্যানার্জী বাড়িতে মিষ্টুর জন্মদিনকে ঘিরে রীতিমত আলোড়ন পড়েছে।
সোনাপলাশি গ্রামের বাসিন্দা পার্থসারথী ব্যানার্জী পেশায় পুরোহিত। প্রতিদিনই সকালে স্ত্রী শান্তিময়ী ব্যানার্জীকে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বের হন। ঠিক এক বছর আগে এই দিনটিতেই প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে অস্বাভাবিক আওয়াজ পেয়ে একটি টিয়া পাখির বাচ্চাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তাঁরা। সেবা শুশ্রুষা পেয়ে ব্যানার্জী বাড়িতেই থেকে যায় টিয়া শাবকটি। তার নাম দেওয়া হয় মিষ্টু। বাড়ির মেয়ের মতই তাকে লালন-পালন করছেন শান্তিময়ীদেবীরা। তাঁদের এক পুত্র সন্তানের সঙ্গে মিষ্টুকেও সমান স্নেহে লালন-পালন করছেন, মিষ্টুও ব্যানার্জী বাড়ি ছেড়ে চলে যায়নি। খাঁচায় তাকে বন্দি করার কথাও কখনও ভাবেন নি শান্তিময়ীদেবীরা। রবিবার সেই মিষ্টুর ছিল জন্মদিন। আর সেই জন্মদিনেই আয়োজিত হল ভুড়ি ভোজের।
পার্থসারথীবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারে ছেলেমেয়েদের জন্মদিন পালিত না হওয়ার রেওয়াজ রয়েছে প্রায় ৫০ বছরের। এবারই প্রথম মিষ্টুর জন্মদিন পালন করা হল পরিবারে। কাটা হয় কেক। ছিল এদিন মিষ্টুর পছন্দের ছোলা সহ সমস্ত আয়োজনের সঙ্গে প্রায় ৫০ জন নিমন্ত্রিতদের জন্যও ব্যাপক আয়োজন। ভাত, ডাল, পোস্ত, পটল-চিংড়ি, চাটনি, পাঁপড়, পায়েস, দই এবং মিষ্টি। অতিথিদের পাশে বসে একই সঙ্গে সেই ভুড়ি ভোজে অংশ নেয় ‘মিষ্টু’ও।