বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে করোনা পজিটিভ রোগিনীর আগুনে পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলেন ঘটনার তদন্তে আসা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ৩ সদস্যের টিম। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার পরই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি পৃথক তদন্তকারী টিম গঠন করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আগুন লাগার কারণ হিসাবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ৩ সদস্যের তদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে ওই রোগিনী সন্ধ্যা মণ্ডলের মুখে হাই-ফ্লো নাসাল মাস্ক লাগানো ছিল। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়ার্ডের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, সন্ধ্যাদেবী সেই মাস্ক খুলে লাইটার দিয়ে মশা মারার ধূপ জাতীয় কিছু জ্বালানোর চেষ্টা করছেন। আর তাতেই দ্রুত আগুন লাগে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মৃতার বিছানা থেকে পাওয়া গেছে একটি লাইটার। এই ঘটনাকে নিছকই দুর্ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, প্রাথমিকভাবে এই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ পাবার পরই শুরু হয়েছে নতুন করে বিতর্ক। মৃত সন্ধ্যা মণ্ডলের মেয়ে রাণু মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁর মা নিজে হাতে করে খেতেও পারতেন না। তাঁকে খাইয়ে দিতে হত। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর পক্ষে লাইটার জ্বালানো সম্ভব নয়। শুধু তাইই নয়, তিনি জানিয়েছেন, তিনি যখন তাঁর মাকে ওই ওয়ার্ডে দিয়ে আসেন সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিল একটি ব্যাগ, জলের বোতল। সেখানে লাইটার দেওয়ার প্রশ্নও নেই। তিনি জানিয়েছেন, কিভাবে আগুন লাগল তার প্রকৃত তদন্ত চাইছেন তাঁরা। তিনি জানিয়েছেন, মশার জন্য তাঁরা মশারি দিয়ে এসেছিলেন, তাহলে মশা মারার ধূপ জ্বালানোর প্রসঙ্গ আসছে কোথা থেকে?

অন্যদিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রাথমিক এই রিপোর্টে লাইটারের তত্ত্ব আসায় তা নিয়েও বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, লাইটার এল কোথা থেকে? কে নিয়ে গেছিল লাইটার তা জানা প্রয়োজন। একইসঙ্গে এতবড় একটা অগ্নিকাণ্ড হল, গোটা বিছানা পুড়ে রোগিনীই যেখানে মারা গেল সেখানে কিভাবে আস্ত লাইটার পাওয়া গেল- প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ ও পারিপার্শ্বিক তথ্যের ভিত্তিতে এই দুর্ঘটনা বলে তদন্তকারী দলের মনে হয়েছে।

Like Us On Facebook