বৃহস্পতিবার দুই বিবাহিত পুরুষ ও মহিলার অবৈধ সম্পর্কের করুণ পরিণতি দেখলেন বাগিলা স্টেশনে উপস্থিত যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ডাউন বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি বর্ধমান-হাওড়া মেইন লাইনের বাগিলা স্টেশন পার হওয়ার সময় স্টেশনে বসে থাকা এক পুরুষ ও মহিলা ছুটে গিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। কামড়ায় ধাক্কা খেয়ে দু’জনেই প্ল্যাটফর্মে ছিটকে পড়েন। রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানেই দু’জনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে বর্ধমান জিআরপি মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
জানা গেছে, মৃতদের নাম উত্তম দাস (৪৮) ও জবা মালিক (৩৪)। উত্তমবাবুর বাড়ি ভাণ্ডারডিহি গ্রামে এবং জবা মালিকের বাড়ি নাড়াগোয়াল গ্রামে। দুটি গ্রামই বর্ধমানের দেওয়ানদিঘি থানার অন্তর্গত। উভয়েই বিবাহিত। বাড়িতে উত্তমবাবুর স্ত্রী ছাড়া দুই সন্তান আছে। জবাদেবীরও বাড়িতে স্বামী এবং দুই সন্তান আছে। উত্তমবাবুর নিজের একটি গাড়ি আছে। তিনি নিজেই সেই গাড়ি চালান এবং গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করেন।
জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে এক রাতে জবাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর পরিবারের লোকজন উত্তমবাবুর গাড়ি ভাড়া করে জবাদেবীকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। সেই থেকেই জবাদেবী এবং উত্তমবাবুর পরিচয়। সেই পরিচয় থেকেই ধীরে ধীরে দু’জনের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর হঠাৎই একদিন জবাদেবী তাঁর স্বামী-সন্তানদের ছেড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। জবাদেবীর বাবার বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোন সন্ধান পানানি। থানায় কোন অভিযোগও দায়ের করেন নি তাঁরা। জানা গেছে, উত্তমবাবু বাড়িতে থাকলেও নিয়মিত জবাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন। উত্তমবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় উত্তমবাবু বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেন নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে উভয় পরিবার দু’জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পায়। নিজেদের বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখার নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে উত্তমবাবু এবং জবাদেবী শেষমেশ আত্মঘাতী হলেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?