ধাপে ধাপে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলাকেই সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলার কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গেল। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলার আয়তন ৫৫০০ স্কোয়ার কিলোমিটার। আর গোটা জেলাকেই এবার কার্যত সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার কাজ শুরু হয়ে গেছে। জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন জানিয়েছেন, প্রথম দফায় জেলার ৬টি পুর এলাকায় বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। শুক্রবার বর্ধমান থানা এলাকার কয়েকটি জায়গায় নজরদারি করার জন্য চালু করা হল ৩০০ টি সিসি ক্যামেরা। ক্রমান্বয়ে আরও ৩০০টি ক্যামেরা লাগানো হবে।

ইতিপূর্বেই কালনা, কাটোয়া, মেমারি এবং গুসকরা থানা এলাকায় সিসি ক্যামেরায় নজরদারির কাজ শুরু হয়েছে। মেমারিতে প্রথম দফায় ৫৫ টি ক্যামেরা কাজ করছে। দ্বিতীয় দফার প্রস্তুতি চলছে। দ্বিতীয় দফা শুরু হলে তৃতীয় দফার প্রস্তুতি শুরু হবে। কালনা এবং কাটোয়া থানা এলাকায়ও সি সি ক্যামেরার নজরদারি চলছে। আগামী ১০ তারিখে কাটোয়া থানা এলাকায় শেষ দফার কাজ শেষ হয়ে গেলে ৫০০ টি ক্যামেরার নজরদারি চলবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। মূলত, অপরাধ রুখতে এবং অপরাধী ধরতে ক্রমশ বাড়ছে প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতা। আর এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে সিসি ক্যামেরার গুরত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তাঁদের নিরাপত্তার জন্য বাড়ি এবং কর্মস্থল ও অফিসে বসাচ্ছেন এই সিসি ক্যামেরা। তেমনই পুলিশ-প্রশাসনও নিরাপত্তা-সহ সুষ্ঠ পরিষেবার জন্য এই সিসি ক্যামেরা বসাচ্ছে।

শুক্রবার বর্ধমান থানায় এই ব্যবস্থার জন্য কন্ট্রোল রুমের উদ্বোধন করে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাটিরই সূচনা করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন। তাঁর সাথে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেড কোয়ার্টার কল্যাণ সিংহ রায়, ডিএস পি ট্র্যাফিক (২) রাকেশ কুমার চৌধুরী, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য পুলিস কর্মীরা। পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন জানিয়েছেন, এই ক্যামেরা বসানোর জন্য অনেক ক্ষেত্রে অপরাধ হওয়ার আগেই তা রুখে দেওয়া সম্ভব হবে। আবার অপরাধ হলে অপরাধীকে চিহ্নিত করতে অথবা ঠিক কী হয়েছিল তা বুঝতেও তদন্তকারীদের সুবিধা হবে। অনেক সময় গাড়ি ব্যবহার করে অপরাধ সংগঠিত করা হয়, সেক্ষেত্রে সেই গাড়িটিকে চিহ্নিত করতে এবং সেটি কোন দিকে গেছে -সেটি জানতেও সুবিধা হবে এই ব্যবস্থার ফলে। তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার আয়তন ৫৫০০ স্কোয়ার কিলোমিটার। এত বড় এলাকা একটা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে কন্ট্রোল রুম করে নজরদারি করা প্রায় অসম্ভব। তাই জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই সিসি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর এক্ষেত্রে প্রথম তালিকায় রাখা হয়েছে পুরসভা এলাকাগুলি। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান থানা এলাকায় প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০০ টি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি শুরু করা হ’ল। বর্ধমান শহরের জি টি রোড, বি সি রোড-সহ কয়েকটি এলাকায় এই ক্যামেরার মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা ধরেই কন্ট্রোল রুম থেকে চলবে নজরদারি। পরবর্তী পর্যায়ে বর্ধমান থানা এলাকায় আরও ৩০০ টি ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Like Us On Facebook