হকার উচ্ছেদের নোটিসে কয়েক দিন আগে দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গী মোড় থেকে প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত নাচন রোড বর্তমানে আনন্দ গোপাল সরণির হকাররা দুর্গাপুর নগর নিগমের উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। বর্তমানে দুর্গাপুর নগর নিগমের হকার উচ্ছেদের বিষয়টি নিয়ে হকার বনাম দুর্গাপুর নগর নিগমের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এরইমধ্যে ফের আনন্দ গোপাল সরণির ব‍্যবসায়ীদের বিল্ডিংয়ের বৈধতা জানতে দুর্গাপুর নগর নিগম ২৮ জন ব‍্যবসায়ীকে বিল্ডিং প্ল‍্যান চেয়ে নোটিস পাঠাল। দুর্গাপুর নগর নিগমের এই নোটিসকে ঘিরে ভিড়িঙ্গী বেনাচিতির ব‍্যবসায়ীদের মধ্যে চরম বিভ্রান্তি ছড়ালো। এদিকে দোকানদারদের কাছে দুর্গাপুর নগর নিগম বিল্ডিং প্ল‍্যান চাওয়ায় দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গী বেনাচিতি এলাকার অনেক অবৈধ বাড়ির মালিকদেরও রাতের ঘুম উড়ে গেছে বলে খবর।

ব‍্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর নগর নিগম এই নোটিসে ব‍্যবসায়ীদের সমস্ত তথ্য জানতে চেয়ে নোটিসে জানিয়েছে যেসব ব‍্যবসায়ীদের বিল্ডিং প্ল‍্যান নেই তাঁদের দোকান ভেঙে ফেলতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই সব অবৈধ বিল্ডিং না ভাঙলে দুর্গাপুর নগর নিগম ভেঙে দিলে দোকানের মালিকের হাতে দোকান ভাঙার সংশ্লিষ্ট খরচের বিল ধরাবে। দুর্গাপুর নগর নিগমের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ভিড়িঙ্গী বেনাচিতির ব‍্যবসায়ী মহল।

জানা গেছে, যে কয়েকজন ব‍্যবসায়ীকে দুর্গাপুর নগর নিগম এই নোটিস ধরিয়েছে তাঁদের বেশির ভাগেরই নিজস্ব দোকান নেই। ঘর ভাড়া নিয়ে দোকান চালান। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের কাছে বিল্ডিং প্ল‍্যান থাকার কথা নয়। যে কটি নিজস্ব মালিকানার দোকান রয়েছে তা নিতান্তই হাতে গোণা। তাছাড়া অনেক দোকানই তৈরি হয় ১৯৫৬-৫৮ সালের রেভিনিউ সার্ভে প্লটের উপর। তখন জমির দলিল ছিল না। কেবলমাত্র পরচার উপর নির্ভর করে বাড়ি-দোকান তৈরি হয়েছে। জমির পরচায় আরএস প্লট উল্লেখ আছে বলে দাবি ব‍্যবসায়ীদের। ব‍্যবসায়ীরা বলেন, তখন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা দুর্গাপুর নগর নিগমের অস্বিত্ব ছিল না। পরবর্তী সময়ে দুর্গাপুর নোটিফায়েড এরিয়া অথরিটি গঠিত হয়। স্বাভাবিক ভাবেই বিভ্রান্ত ব‍্যবসায়ী মহল। কয়েক দশক ধরে বিল্ডিং প্ল‍্যান ছাড়াই বেনাচিতির অনেক ব‍্যবসায়ী ব‍্যবসা করছেন অথচ আলাদা ভাবে এর আগের পুর বোর্ড কখনও বিল্ডিং প্ল‍্যান চায়নি তাহলে হঠাৎ করে কেন দুর্গাপুর নগর নিগম কঠিন সিদ্ধান্ত নিল?

সূত্রের খবর, আনন্দ গোপাল সরণিতে সম্প্রতি নতুন একটি ইলেকট্রনিক্স দোকান মালিকানা হস্তান্তর হওয়ার পর বিনা অনুমতিতে নির্মাণের পরপরই শাসক দলের এক নেতা দুর্গাপুর নগর নিগমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। এরপরেই দুর্গাপুর নগর নিগম আনন্দ গোপাল সরণির প্রাথমিক ভাবে ২৮ টি দোকানকে চিহ্নিত করে বিল্ডিং প্ল‍্যান চেয়ে নোটিস ধরায়।

দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের এক কর্তা হরপ্রসাদ ঘোষাল বলেন, দুর্গাপুর নগর নিগম আমাকেও বিল্ডিং প্ল‍্যান চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে। আমরা বেনাচিতির কমলপুর প্লটের বাসিন্দা। আমরা কমলপুরের আদি বাসিন্দা। আমরা আদি জমির পরিবর্তে বেনাচিতির আরএস প্লট পেয়েছি ১৯৫৬-৫৮ সালে। সেই সময় তো কোন বোর্ড ছিল না। আমরা তখন প্ল‍্যান ছাড়াই বাড়িঘর বানিয়েছি। তাহলে আমরা এখন কোথায় পাব বাড়ির প্ল‍্যান? হরপ্রসাদ বাবুর মতো বেনাচিতির অনেক ব‍্যবসায়ীরই একই প্রশ্ন। দুর্গাপুর নগর নিগমের কর্তারা এই নোটিস নিয়ে এখনই কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন।

Like Us On Facebook