বুধবার রাজ্য সরকারের নির্দেশে পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রায় ৪৭টি ফেরিঘাট নিয়ে এক বৈঠকে বিস্তারিত পর্যালোচনা করলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। পূর্ব বর্ধমান জেলায় যে ফেরিঘাটগুলি রয়েছে তার মধ্যে ভাগীরথী তথা গঙ্গায় থাকা ফেরিঘাটগুলির সঙ্গে নদীয়া জেলাও যুক্ত রয়েছে। ফলে দুই জেলার অধীনে থাকা ফেরিঘাটগুলি নিয়ে এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বর্ধমান জেলা প্রশাসনের ডাকা এই বৈঠকে হাজির ছিলেন নদীয়া জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাও।

সম্প্রতি ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার বন্ধ করতে নড়েচড়ে বসে রাজ্য পরিবহনদপ্তর। এব্যাপারে ঝুঁকিবহুল জেটির সংস্কারের উদ্যোগও নেওয়া হয়। রাজ্যজুড়ে মোট ৬৮টি জেটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বরাদ্দ করা হয় প্রায় ৮ কোটি টাকা। জেলাশাসক জানিয়েছেন, এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি জেটি সংস্কারের জন্য ৩ দফায় মোট ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা তাঁরা পেয়েছেন। এই টাকায় ওই ১৬টি জেটিতে সিসিটিভি, লাইফ জ্যাকেট রাখা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা সহ নানারকম কাজ করা হবে।

উল্লেখ্য, প্রতিদিন সাধারণ যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে গঙ্গা পারাপার করতে হয়। এর ফলে প্রাণও গেছে বহু যাত্রীর। গতবছরই কালনা ফেরিঘাটে নৌকাডুবিতে প্রায় ২০জনের প্রাণ যায়। জেলাশাসক জানিয়েছেন, যাত্রীবাহী নৌকায় উঠলে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এব্যাপারে কোনো গাফিলতি পেলে সংশ্লিষ্ট ঘাট মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজনে তাদের ঘাটের বরাত বাতিলও করা হবে। এদিনই বৈঠকে হাজির থাকা ঘাট মালিকদের তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ফেরি ঘাটগুলিতে নদীর পাড় থেকে জেটিতে ওঠার জন্য যে সেতু থাকে, তার মুখে একটি গেট বসানো হবে। অর্থাৎ, জেটিতে যাত্রীবাহী নৌকা বা লঞ্চ পৌঁছনো মাত্রই যেভাবে যাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে ওঠেন, সেটা আটকাতেই এই ব্যবস্থা। সব যাত্রী না নামা পর্যন্ত ওই গেট খোলা হবে না। এর ফলে কোনও যাত্রী সেতু পার হয়ে নৌকা বা লঞ্চে উঠতে পারবেন না। এব্যাপারে দেখভাল করার জন্য প্রতিটি জেটিতে সর্বক্ষণের জন্য নিরাপত্তারক্ষী রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গোটা বিষয়টিতে সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Like Us On Facebook