বুধবার সকাল থেকেই গোটা শহর জুড়েই শুরু হয় লকডাউন। আচমকাই ফের আরও একটা ৭দিনের এই লকডাউনের মুখে পড়ে রীতিমত নাকানিচোবানি খেলেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই বুঝতে পারেননি বুধবার সকাল থেকেই শহর জুড়ে লকডাউন ঘোষণা হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা এদিন সকালেই নিত্যদিনের মতই বাজার দোকানে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু পথেই জায়গায় জায়গায় পুলিশ কর্মীরা তাঁদের বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতেই জেলাশাসকের ঘোষণার পরই গোটা শহর জুড়ে মাইকিং করা হয়। বুধবার সকালেও তা ছিল অব্যাহত। এদিকে, শহরের বাইরে থেকে যাঁরা এদিন শহরে আসতে চেয়েছিলেন বিভিন্ন কারণে তাঁরাও আচমকা আটকে পড়ায় সমস্যায় পড়েন। এদিন শহরে ঢোকার পথে পুলিশ ব্যারিকেড করে সাধারণ মানুষকে আটকে কারণ জানতে চেয়েছে। উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
বস্তুত, এর আগেও লকডাউনের সময় যেমন কিছু মানুষ সবকিছুকে উপেক্ষা করার প্রবণতা দেখিয়েছিলেন এদিনও কিছু মানুষ রীতিমত অজুহাত দেখিয়ে পার পাবার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু এদিন কড়া হাতেই পুলিশ কর্মীরা তার মোকাবিলা করেছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫২জন। তার মধ্যে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। ফলে পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩-এ। বুধবার বর্ধমান শহরের লস্করদিঘী এলাকায় এবং রাণীগঞ্জ বাজার এলাকায় আরও এক ব্যক্তির করোনায় মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫-এ। কেবলমাত্র বর্ধমান পুর এলাকায় মঙ্গলবার ২৮জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে কেবলমাত্র বর্ধমান শহরেই গত কয়েকদিনে প্রায় ৭০জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরই মাঝে খোদ বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার আশীষ বণিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে মঙ্গলবার বর্ধমানের ক্যামরি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও সংশোধনাগার সূত্রে জানা গেছে, এখনও কোনো আসামীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি।
অপরদিকে, এরই পাশাপাশি বর্ধমানের রায়নার তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘড়ুইয়ের দেহরক্ষী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বুধবার থেকেই বিধায়ককে হোম কোয়রাণ্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা রায়না জুড়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশেষত, মঙ্গলবারই তৃণমূলের শহীদ দিবস ছিল। খোদ বিধায়কের উপস্থিতিতেই এই শহীদ দিবস পালন হয়েছে। ফলে নতুন করে আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। কার্যত, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকার কারণেই শহর জুড়ে লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও শহরের বাইরেও করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা এখনও চলতে থাকায় গোটা জেলা জুড়েই ফের লকডাউনের ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে।