গলায় মালা ও সিঁথিতে সিন্দুর, পায়ে আলতা পরা অবস্থায় বর্ধমানের হোটেল থেকে উদ্ধার হল যুগলের দেহ। বর্ধমান শহরের তিনকোণিয়া বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় শালিমার লজ থেকে রবিবার বিকেলে উদ্ধার হয় যুগলের ঝুলন্ত দেহ।পুলিশ ও লজ সূত্রে জানা গেছে, মৃতদের নাম মহাদেব মাজি (২০) এবং প্রিয়াঙ্কা মিত্র (১৮)। মহাদেব মাজির বাড়ি বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার দীঘলগ্রামে হলেও পুলিশ প্রিয়াঙ্কার বাড়ির বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে।
শালিমার লজের কর্মী তাপস কান্তি মন্ডল জানিয়েছেন,শনিবার বিকেলে মহাদেব মাজি ওই হোটেলে আসেন। হোটেল কর্মীদের মহাদেব মাজি জানান, তিনি ব্যাঙ্গালোর থেকে এসেছেন বর্ধমানে কাজ আছে। আজ রাতে বর্ধমানে থাকতে হবে। যথারীতি আধার কার্ডের জেরক্স জমা দিয়ে লজের ৫০৬ নম্বর রুমে তিনি ওঠেন। রবিবার সকাল প্রায় ১০ টা নাগাদ মহাদেব হোটেল থেকে বের হন। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই প্রিয়াঙ্কা মিত্রকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে আসেন। হোটেল কর্মীরা জিজ্ঞাসা করলে মহাদেব জানান, প্রিয়াঙ্কা তাঁর বোন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে হোটেল থেকে বেড়িয়ে যাবে। এরপরই তাঁরা ৫০৬ নম্বর রুমে চলে যান। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে হোটেলের ঘর না ছাড়ায় হোটেল কর্মীরা তাঁর ঘরে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে হোটেলের সিনিয়র ম্যানেজারকে ডাকা হয়। তিনিও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বর্ধমান থানায় খবর দেন। বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে হোটেলের ঘরের সিলিং-এর হুকে দু’জনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। দু’জনের গলায় ফুলের মালা ছাড়াও প্রিয়াঙ্কার সিঁথিতে সিঁদুর এবং পায়ে আলতা ছিল। সম্ভবত সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই দু’জনে একসাথে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশ হোটেলের ঘর থেকে একটি স্যুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। স্যুইসাইড নোটে লেখা ছিল – ‘বাবা তুমি আমাদের তো একসাথে থাকতে দিলে না, মৃত্যুর পর যেন আমাদের আলাদা কোর না।’ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।