করোনা আবহে বন্ধ স্কুল যাওয়া। বন্ধুরা যখন মাঠে-ঘাটে খেলে বেড়াচ্ছে তখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সুমন সংসার চালাতে সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে মিষ্টি ফেরি করে বেড়াচ্ছে। সংসারের একমাত্র রোজগেরে বাবা অসুস্থ, তাই বাবার চিকিৎসা এবং মা ও বোনের মুখে অন্ন তুলে দিতে সুমন নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের দায়ীত্ব। গ্রামের পর গ্রাম সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে সুমন বিক্রি করে চলেছে মিষ্টি। বর্ধমানের নবস্থা অঞ্চলের খাঁড়গ্রাম ঘোষপাড়ার বাসিন্দা বছর ১৩-র সুমন ঘোষ। সে স্থানীয় খাঁড়গ্রাম জুনিয়র হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
জানা গেছে, বছর দুয়েক আগে পেশায় অ্যাম্বুলেন্স চালক সুমনের বাবার রক্তে সুগার ধরা পড়ে। সঙ্গে শরীরে অন্যান্য রোগ বাসা বাঁধায় তিনি কর্মক্ষমতা হারান। এই অবস্থায় বাবা-মা ও ছোট্ট ২ বছরের বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে মায়ের তৈরি মিষ্টি ফিরি করতে বেড়িয়ে পড়ে সুমন। শীতের মরসুমে সুমন বিক্রি করছে নলেন গুড়ের রসগোল্লা। সাইকেলে রসগোল্লার পাত্র বেঁধে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে সে বিক্রি করে চলেছে রসগোল্লা।
সুমন জানিয়েছে, তার বাবা অসুস্থ। ব্লাড সুগারের জন্য বাবার চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়। তারপরই সংসার চালানোর তাগিদে সে বেড়িয়ে পড়ে বাড়ির তৈরি মিষ্টি বিক্রি করতে। সে নিয়মিত খোঁজ রাখে কোথাও কোনো অনুষ্ঠান, খেলাধূলা, মিটিং, মিছিল হচ্ছে কিনা। খবর পেলেই চলে যায় সেখানে। বিক্রিও হয় ভালই। বিক্রি শেষে ঘরে ফেরা। পড়াশোনা করা। আছে একজন গৃহশিক্ষকও। বাকিটা বাবার কাছেই পড়া। না, এই কাজ করতে তার কোনো অসুবিধা হয় না। বরং মন দিয়েই সে এই কাজ করে চলেছে।