সম্প্রতি রিলিজ করেছে মানস বসু পরিচালিত শ্বাশত-শ্রাবন্তী জুটির নতুন ছবি ছবিয়াল। আর সেই ছবিয়াল ছবির মূল কাহিনীকার যিনি তিনি বর্ধমান শহরের বাসিন্দা দীর্ঘদিনের লেখক ইন্দ্রনীল বক্সী। সিনেমার বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত পোস্টারেও রয়েছে কাহিনীকার হিসাবে তাঁর নাম। আর যা দেখে এখন খোদ বর্ধমান শহর সহ গোটা জেলা জুড়েই লেখক, কবি, সাহিত্যিকরা খুশি। অনেকেই বলেছেন, একটা সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিম চন্দ্র, শরৎচন্দ্রের লেখা কোন গল্পের চিত্রায়ণ হলে সেখানে এই সমস্ত মনীষীদের নাম দেওয়া হত। এখন অনেকাংশেই তা দেখা যায় না।
দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বিভিন্ন লেখকের গল্প নিয়ে ছবি করা হলেও কৃতজ্ঞতা স্বরূপ যেমন কাহিনীকারের নাম প্রকাশ করা হয় না, তেমনই কাহিনীকারের গল্প নিয়ে চিত্রায়ণ ঘটানো হলেও তাঁদের কোন সাম্মানিক অর্থও জোটে না। আর মূলত দীর্ঘদিনের সেই মিথ ভেঙে মানস বসুর ছবিয়াল ছবির ব্যানারে কাহিনীকারের নাম ছাপা হওয়ায় রীতিমত খুশী খোদ লেখক ইন্দ্রনীল বক্সীও। তিনি জানিয়েছেন, এটা তাঁর কাছে সত্যিই অভাবনীয়। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে তাঁর একটি গল্প সংকলন বের হয় রাক্ষস নামে। সেই সংকলনেই ছিল একটি গল্প ছবিঘর। এই গল্পটি ২০১৫ সালে কলকাতার একটি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়। আর তার কয়েকমাস পরেই পরিচালক মানস বসু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
ইন্দ্রনীলবাবু জানিয়েছেন, একজন মফস্বল বাংলার লেখকের গল্পের চরিত্ররা পর্দায় জীবন্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে – এই দৃশ্য তাঁর কাছে চিরস্মরণীয় হয়েই থাকবে। তিনি জানিয়েছেন, পরিচালক শুধু তাঁকে স্বীকৃতিই দেননি, টাইটেল কার্ডে তাঁর নামকে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গ রাখা ছাড়াও তাঁকে সাম্মানিকও দিয়েছেন – যা সত্যিই তাঁকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। এদিকে, একজন মফস্বল বাংলার লেখকের এই গল্প নিয়ে সিনেমা করা, তাঁকে সম্মান জানানোর এই ঘটনায় খুশী বর্ধমান শহরের অন্যান্য লেখকরাও। বর্ধমানের লেখক অপূর্ব দাস, কানাইলাল বিশ্বাস, অর্পণ কর্মকার প্রমুখরা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তাঁরাও যথেষ্ট আশাবাদী হয়ে উঠছেন। সেক্ষেত্রে সিনেমার পরিচালকদের উদার মনোভাবের আরও বিস্তৃতি ঘটারও কামনা করছেন। অপূর্ববাবু জানিয়েছেন, গল্প চুরি নয়, গল্পকারকে সম্মান জানানোর এই যে পথ নতুন করে খুলে দিলেন মানস বসু তা অন্যরাও অনুসরণ করলে গ্রাম বাংলার উঠতি লেখকরাও উপকৃত হবেন।