বর্ধমান জেলখানা এখন কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। ইতিমধ্যেই এই সংশোধনাগারকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে রক্ষীদের জন্য নতুন ব্যারাক, আসামীদের জন্য নতুন কয়েদখানা তৈরিও। কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার হওয়ায় এবং রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলখানাকে তুলে দেওয়ায় সেখান থেকেও আসামীদের বর্ধমানের এই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হচ্ছে। সম্প্রতি আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় তিনশো আসামীকেও। স্বাভাবিকভাবেই সংশোধনাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও আঁটোসাঁটো করে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এযাবৎ জেলখানার যে উঁচু প্রাচীর ছিল তার বাইরেও জেলখানার নিজস্ব বিঘের পর বিঘে জমিকেও আলাদা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। আর জেলখানার এই নিজস্ব জায়গা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়াকে ঘিরেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।
বর্ধমান শহরের ৩নং ওয়ার্ডের মেহেদিবাগান মাঠপাড়া, পাঞ্জাবীপাড়ার কয়েক হাজার বাসিন্দা দাবি তুলেছেন, এই প্রাচীর দেওয়ায় জেলখানার জমির উপর দিয়ে যাওয়া তাঁদের দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত রাস্তাকেও ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন এলাকার মানুষ থেকে ছোটরা। ইতিমধ্যেই এই সমস্যার বিষয় নিয়ে জেলখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ৬ফুটের চওড়া রাস্তা ছেড়ে প্রাচীর দেবার আবেদন জানিয়েছেন বাসিন্দারা। আবেদন জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও।
যদিও এব্যাপারে বর্ধমান পুরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার তথা বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পরিদর্শক সেলিম খান জানিয়েছেন, জেলখানা কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কারণেই তাদের জমি ঘিরে নিতে শুরু করেছে। মাঠপাড়ার বাসিন্দারা তাঁদের যাতায়াতের অসুবিধার কথা জানানোর পর জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় রাস্তার জন্য ৪ ফুট ছেড়ে প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাই তাঁরাই এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। অন্যদিকে, এলাকার বাসিন্দা অভিজিত নন্দী, যোগেশ্বর দাস বৈরাগ্য, কণা মিত্র প্রমুখরা জানিয়েছেন, এই রাস্তাটি থাকায় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ জিটিরোড এড়িয়ে যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু এই রাস্তাটি বন্ধ হলে ফের বিপদের মুখে পড়বেন এলাকার কচিকাঁচা থেকে সাধারণ মানুষ। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মিটলে তাঁরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।