একদিকে যখন এক বোতল রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় সাধারণ মানুষকে – সেই সময় বর্ধমানের কালনা রোডের পাশে ডাম্পিং গ্রাউণ্ডেই ময়লা-আবর্জনার মধ্যে থেকে পাওয়া গেল প্রায় ৪০ প্যাকেট তাজা মেয়াদ অনুত্তীর্ণ রক্তের পাউচ প্যাক এবং ৩টি মড়ার খুলিও। শনিবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকা জুড়ে।
ডাম্পিং গ্রাউণ্ডের ময়লা রাস্তায় ফেলে দেওয়া এবং বর্ধমান হাসপাতাল সহ নার্সিংহোমের বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ সিরিঞ্জ, সূচ প্রভৃতিকে রাস্তার ওপরই ফেলে দেওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর তীব্র আপত্তির জেরে পুরসভা দুটি জেসিবি মেশিন দিয়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ময়লাকে সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা সেখ রকি জানান, দীর্ঘদিন আগেই হাসপাতালের বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ এই ডাম্পিং গ্রাউণ্ডে ফেলা নিষিদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এদিন দেখা গেছে হাসপাতালের বর্জ্য পদার্থ, সিরিঞ্জ, সূচের পাশাপাশি আগামী মে মাসে মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে এরকম প্রায় ৪০টি রক্তের প্যাকেট। কিভাবে এই তাজা রক্তের প্যাকেট এভাবে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা নিয়েও সরব হয়েছেন তাঁরা। তিনি জানিয়েছেন, এই রক্তের প্যাকেটগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার কথা আগামী মে মাসে। কিন্তু কিভাবে তা এভাবে ফেলে দেওয়া হল এবং কেনই বা ফেলে দেওয়া হল তা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। একইসঙ্গে কিভাবে ওই মড়ার খুলি ডাম্পিং গ্রাউণ্ডে এল সে ব্যাপারে প্রশাসনের তদন্ত করে দেখা উচিত।
এদিকে, এব্যাপারে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, কিভাবে ওই তাজা রক্তের প্যাকেটগুলি ওখানে গেল তা নিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন জায়গাতেও রক্ত দেওয়া হয়। এছাড়া বেসরকারীভাবেও অনেক ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কোথা থেকে ওই রক্তের পাউচ গেল তা তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি জানান, এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে, এরই পাশাপাশি যে মড়ার খুলি পাওয়া গেছে সে ব্যাপারে তিনি জানান, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এই সমস্ত বর্জ্য পদার্থগুলি বিনষ্ট করার জন্য এজেন্সী নিয়োগ করেছে। এটা দেখার দায়িত্ব তাদেরই। এব্যাপারেও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান। অপরদিকে, এই ঘটনায় খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ এসে মড়ার খুলিগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যান।