টাকা লুঠের জন্য বাড়িতে ঢুকে নৃশংসভাবে বৃদ্ধকে গুলি করে খুনের ঘটনায় এক বিজেপি নেতা সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত বিজেপি নেতার নাম জয়ন্ত সাঁতরা, তিনি বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের ২৭ নম্বর জেলা পরিষদের শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ। অন্য দু’জন সরাইটিকরের সিরাজুল হক মন্ডল ওরফে টগর শেখ এবং বেচারহাটের গৌতম মণ্ডল। ভোটের মুখে খুনের ঘটনায় বিজেপি নেতা গ্রেফতার হওয়ায় রাজনৈতিক চাপান-উতর শুরু হয়েছে।
গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রায়নার পোস্ট অফিস পাড়ার বাড়িতে টাকা হাতানোর উদ্দেশ্যে বাড়িতে ঢুকে বাধা পেয়ে গুলি করে বৃদ্ধ জীবন কানাই সেনগুপ্ত (৭৪)কে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। খুনের ঘটনার পরেই জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করে তদন্তে শুরু করে পুলিশ। ঘটনার ৯ দিনের মাথায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে সিরাজুল হক মন্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি দু’জনকে বর্ধমান থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতরা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃতদের মধ্যে গৌতম ও সিরাজুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের মধ্যে সিরাজুলের শাশুড়ি নিহতের বাড়িতে আয়ার কাজ করতেন। তাঁর কাছ থেকেই ধৃতরা জানতে পারে রায়না পোস্ট অফিস পাড়ার একটি বাড়িতে শুধু তিনজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন। সেই বৃদ্ধর ঘরের আলমারিতে টাকাও থাকতো। এরপরেই টাকা লুটের পরিকল্পনা শুরু করে সিরাজুল। বন্ধু গৌতমও সিরাজের সঙ্গে যোগ দেয়। খুনের ঘটনার দিন জয়ন্তকে সঙ্গে নিয়ে গৌতমের মোটরবাইকে চড়ে তিনজন রায়না বাজারে পৌঁছায়। কিছুটা দূরে মোটরবাইক রেখে বাড়ির ভিতরে ঢোকে তাঁরা। এরপর বৃদ্ধ জীবন কানাইবাবুকে বন্দুক দেখিয়ে টাকা চাইলে টাকা দিতে না চাইলে ও চেঁচামেচি শুরু করলে বৃদ্ধকে গুলি করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতিরা।
এদিকে, ডাকাতি ও গুলি করে খুনের অভিযোগে বিজেপি নেতা গ্রেফতার হওয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতর। বিজেপি বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক শ্যমল রায়ের অভিযোগ, পুলিশ তদন্ত করুক। পুলিশি তদন্তে আমরা কোন হস্তক্ষেপ করতে চাই না। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে শাসক দলের কোন চক্রান্ত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা উচিৎ। পাল্টা জেলা তৃণমুলের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাসের দাবি, বিজেপির নেতা ডাকাতি করে খুন করে চলে এল। কারা বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বলছে? এর বিচার বাংলার মানুষ করবে। আইন আইনের পথেই চলবে।