ইমিটেশন গহনা তৈরি ও পালিশ করার একটি কারখানায় ব্যবহৃত অ্যাসিডের তীব্রতার জেরে ফের একাধিক গবাদি পশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন গ্রামবাসীরা। কারখানার গেটের সামনে মৃত পশুদের ফেলে রেখে তাঁরা ওই কারখানা বন্ধ করা এবং কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানালেন।
বর্ধমান শহরের রায়ান ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মালিরবাগান মাঠপাড়ায় একটি ইমিটেশন গহনার কারখানাতে ব্যবহৃত অ্যাসিডের দরুণ গোটা এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত প্রায় ১বছর ধরে ওই কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত অ্যাসিড মিশ্রিত জল খেয়ে একের পর এক গরু ছাগলের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভও তৈরি হচ্ছিল গ্রামবাসীদের মধ্যে। কিছুদিন আগে একটি ছাগলের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার মানুষজন বর্ধমান থানায় গিয়ে ওই কারখানাকে দ্রুত বন্ধ করে দেওয়ার দাবিও জানান। মঙ্গলবার ফের একটি গরু সহ ৮টি হাঁস মারা যাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসী সেখ রহমান জানিয়েছেন, ওই কারখানা থেকে নির্গত দূষিত এ্যাসিড মিশ্রিত জল একটি নালায় গিয়ে মিশছে। সেই নালার জল খেয়েই এদিন তার একটি গরু ও একটি হাঁস মারা গেছে। এছাড়াও আরও ৭টি হাঁস মারা গেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
উল্লেখ্য, ওই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মালিরবাগান পশ্চিমপাড়ায় রেহেনা ইমিটেশন অ্যান্ড গোল্ড পালিস নামে একটি কারখানা রয়েছে। সম্প্রতি তারই একটা শাখা চালু করা হয়েছে মাঠপাড়ায়। কিন্তু ওই কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত অ্যাসিডের গন্ধে গোটা এলাকার মানুষ শ্বাসকষ্ট সহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছেন। শিশুরা চরম অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেছে। গত এপ্রিল মাস থেকে ওই কারখানাটিকে বন্ধ করে দেবার জন্য প্রশাসনের সর্বস্তরে আবেদনও জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোন সুরাহা হয়নি। এমনকি কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্যপদার্থ এবং তরল পদার্থের জেরে এলাকার সবুজ ধ্বংস হতে বসেছে। এলাকার পানীয় জলও ক্রমশই বিষাক্ত হয়ে পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে গোটা এলাকাই বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, ওই কারখানার মালিক ওমর আলি সেখ জানিয়েছেন, তাঁর কারখানার যাবতীয় অনুমোদন রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এলাকার কয়েকজন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাঁকে অপদস্থ করতে চাইছেন।