ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে উত্তপ্ত হল বর্ধমানের গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বৃহস্পতিবার রাত্রি প্রায় ১১টা নাগাদ গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পেটের ব্যাথায় কাতর এক রোগীকে কর্তব্যরত নার্স ভুল করে অন্য এক বিষ খাওয়া রোগীর ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় পেটের যন্ত্রণায় কাতর রোগীর। মৃতের নাম গৌতম মণ্ডল (৪৮)। পেশায় ভ্যান চালক। বাড়ি গুসকরার শান্তিপুর পূর্বপাড়ায়। মৃতের ভাই মনমোহন মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত্রে খাওয়াদাওয়ার কিছুক্ষণ পর তাঁর দাদার পেটের যন্ত্রণা শুরু হয়। তাঁরা গৌতমবাবুকে গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌতমবাবুকে পরীক্ষা করে ইঞ্জেকশন লিখে দেন। এরপর তাঁকে একটি বেডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় একইসময়ে সেখানে আরও একটি বিষ খাওয়া রোগী আসেন। ডাক্তারবাবু তাঁকেও পরীক্ষা করে বেডে পাঠিয়ে দেন। দুটি রোগীই পাশাপাশি বেডে ছিলেন। এরপর কর্তব্যরত নার্স দুটি রোগীকে ইঞ্জেকশন দিতে এসে ভুলক্রমে বিষ খাওয়া রোগীর ইঞ্জেকশন গৌতম মণ্ডলকে দেন। এর কিছুক্ষণ পরই মারা যান গৌতম মণ্ডল।’

অন্যদিকে রাত্রেই বিষ খাওয়া রোগীর আত্মীয়রা তাদের রোগীকে চিকিৎসার জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে আনার পরই তাঁরা জানতে পারেন বিষ খাওয়া রোগীকে পেটের যন্ত্রণার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিষ খাওয়া রোগীর ইঞ্জেকশন ভুলক্রমে পেটের যন্ত্রণার রোগী গৌতম মণ্ডলকে দেওয়া হয়েছে। এরপরই শুক্রবার সকাল থেকেই চিকিৎসার ভুলে গৌতম মণ্ডলের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অবিলম্বে ওই নার্সকে বরখাস্ত করা এবং মৃত রোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবার দাবি জানানো হয়।

পরে আউশগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মনমোহনবাবু জানিয়েছেন, গৌতম মণ্ডলের দুটি ছেলে রয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে গোটা পরিবারে চরম সঙ্কট নেমে এসেছে। অন্যদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিক প্রণব রায় জানিয়েছেন, রোগীপক্ষ ভুল চিকিৎসার যে অভিযোগ করছেন তা ঠিক নয়। চিকিৎসা ঠিকই করা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় একটি স্থানীয় সমস্যা চলছে। এই ক্ষোভ বিক্ষোভ তারই জের। গোটা বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এক শিশুকে সাপে কামড়ানোর পর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে এলে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুরও চালানো হয়।

Like Us On Facebook