ভুল ইঞ্জেকশনে এক কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল বর্ধমান হাসপাতালে। মৃত কিশোরের নাম শেখ রাজিবুল (১৪)। বাড়ি বীরভূমের কাঁকড়তলার বাবুইজোড় গ্রামে। রাজিবুল বাবুইজোড় হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন মৃতের পরিজনেরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
মৃতের মা তানজিলা বিবি জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই পেটের ব্যাথায় কষ্ট পাচ্ছিল রাজিবুল। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে গত মঙ্গলবার তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান, রাজিবুলের অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচার করতে হবে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে পরের দিনই তার অস্ত্রোপচার করা হয়। মৃতের মা জানিয়েছেন, ছেলে ক্রমশই সুস্থ হয়ে উঠছিল। শুক্রবার সকাল চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে দেখার পর হাঁটাচলা করার নির্দেশও দেন। শনিবারই তাকে ছুটি দেওয়ার কথা বলেন চিকিৎসক।
তানজিলা বিবি জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে সাড়ে আটটা নাগাদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সিবিএস এক্সটেনশন থেকে মাইকে রাজিবুলের আত্মীয়দের ডেকে পাঠানো হয়। তিনি গেলে তাঁকে কর্তব্যরত নার্সরা জানান, রাজিবুলকে একটি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। তানজিলা বিবিকে রাজিবুলের বেডের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই একজন জুনিয়র নার্স এসে রাজিবুলের হাতে একটি ইঞ্জেকশন দেন। আর এরপরই রাজিবুল ছটফট করতে থাকে এবং পুরো শরীরে জ্বালা করার কথা জানায়। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই মারা যায় রাজিবুল। তানজিলা বিবি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পরই ওই নার্স ওয়ার্ড ছেড়ে বেড়িয়ে চলে যান। তাঁকে আর দেখা যায়নি। এদিকে, এই ঘটনার পর মৃতের মামা সেখ নিজাম বর্ধমান মেডিকেল কলেজের সুপারের কাছে রাজিবুলের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
এব্যাপারে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তাঁরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। তবে যেহেতু রোগীপক্ষ মৃতের ময়নাতদন্ত করতে চাননি তাই ঠিক কি কারণে মৃত্যু হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। ডেপুটি সুপার জানিয়েছেন, রাজিবুলকে যে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল তা আগে থেকেই তাকে দেওয়া হচ্ছিল। নতুন করে কোন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।