প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে বাঁকুড়ার বড়জোড়াতে ৪৩টি হাতির একটি দল এসে পৌঁছেছে। ঝাড়গ্রাম থেকে আরও একটি হাতির দল বাঁকুড়া ঢুকতে চলেছে বলে বন দফতরের দাবি। এই পরিস্থিতিতে ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে বিভাগীয় বন দফতর। পুজোর মুখে পূর্ব বর্ধমান জেলায় যাতে হাতির দল ঢুকতে না পারে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করল বন দফতর। বৃহস্পতিবার ওই ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বর মাসে ৫০টির হাতির দলকে নিয়ে নাস্তানবুদ হতে হয়েছিল রাজ্যের বন দফতর থেকে পূর্ব বর্ধমানের জেলা প্রশাসনকে। বাঁকুড়ার বড়জোড়া থেকে গতবার হাতির দল পাত্রসায়রে চলে আসে। দামোদরের শিল্যাঘাট পেরিয়ে গলসি দিয়ে হাতির দলটি আউশগ্রামের ভাল্কি-প্রতাপগড় জঙ্গলে বেশ কিছুদিন ছিল। হাতি খেদাতে টানা তিনদিন আউশগ্রামে পড়েছিলেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায়। সেই সময় টানা তিন দিন আউশগ্রাম থেকে গলসির পারাজ স্টেশন পর্যন্ত হাতিগুলিকে নিয়ে যাওয়া হলেও আসানসোল-বর্ধমান লাইন পার করতে পারছিলেন না বন দফতরের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরাও। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে ৯ দিনের মাথায় পাত্রসায়রে হাতিগুলিকে ফেরানো গিয়েছিল।
মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পূর্ব চক্র) কল্যাণ দাস বলেন, ‘গতবার থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আপৎকালীন কী কী ব্যবস্থা নিতে পারি সে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় টাস্ক-ফোর্স গঠন করা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানেও ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হবে।’ বৃহস্পতিবারে গঠিত ‘টাস্ক ফোর্সে’ রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, কর্মাধ্যক্ষ শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশের প্রতিনিধিরা থাকবেন। ওই ‘টাস্ক ফোর্সে’র নোডাল অফিসার হয়েছেন জেলার এডিএফও।
বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়গ্রাম থেকে আসা প্রথম হাতির দলটি ১৪ দিন ধরে বড়জোড়াতে রয়েছে। আরও ৭০টির মতো হাতির একটি দলের বাঁকুড়াতে ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা বন দফতরের এক আধিকারিক (অপারেশন) বলেন, ‘সাধারণভাবে পূর্ব বর্ধমানে হাতি ঢোকার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু আরও হাতি বাঁকুড়াতে ঢুকে গেলে ‘রেসিডেন্ট’ হাতিগুলিকে তাড়িয়ে দেবে। তখন দামোদর পেরিয়ে বর্ধমানে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও বড়জোড়ার খাবার শেষ হয়ে গেলে হাতিগুলি পাত্রসায়রের জঙ্গলে ঢুকে গেলে শিল্যাঘাট পেরিয়ে ফের গলসি-আউশগ্রামে চলে আসতে পারে।’ বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ মানুষকে সচেতন করা, হাতির গতিবিধিতে নজরদারি করে আপৎকালীন কি কি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা ঠিক করবেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা।