অবশেষে বর্ধমান শহরের তেজগঞ্জ এলাকায় ৮৪ বছরের বৃদ্ধ গোরাচাঁদ দত্তের খুনের ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করল আগে বাড়িতে দুধ দিতে আসা স্থানীয় এক যুবককে। ধৃতের নাম রণিত দত্ত। বছর ২০ রণিত দত্ত গোরাচাঁদবাবুরই প্রতিবেশি। শনিবার বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই খুনের ঘটনায় অপরাধীকে ধরতে তেমন কোনো ক্লু না থাকায় তাঁদের সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। যদিও এ ব্যাপারে সিআইডির ফরেন্সিক ও ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসা হয়। গোটা এলাকার বিভিন্ন সিসি টিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়। সব মিলিয়ে দেখার পর শুক্রবার রণিতকে গ্রেফতার করা হয়। একইসঙ্গে তাকে নিয়ে গোটা ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হয়।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রণিতের পরিবার আগে গোরাচাঁদবাবুদের দুধ দিত। সম্প্রতি তাদের কাছ থেকে আর তিনি দুধ নিতেন না। যেহেতু তিনি অপরিচিত কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দিতেন না, তাই পূর্ব পরিচিত হওয়ায় রণিতের গোরাচাঁদবাবুর বাড়িতে ঢুকতে কোনো বেগ পেতে হয়নি। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সম্প্রতি রণিত মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। তাই তার জন্য তার প্রচুর টাকার দরকার ছিল। যেহেতু সে জানত গোরাচাঁদবাবু বাড়িতে একাই থাকতেন এবং তার অনেক টাকা রয়েছে, তাই গত ২ জুলাই বিকেলে সে গোরাচাঁদবাবুর কাছে গিয়ে মোটা টাকা দাবী করে। কিন্তু তা দিতে না চাওয়ায় সে গোরাচাঁদবাবুকে আক্রমণ করে এবং গলার নলি কেটে খুন করে। এরপর সে আলমারির চাবি নিয়ে টাকা, গয়নার খোঁজ করে। কিন্তু, সেদিন গোরাচাঁদবাবুর বিছানার তলাতেই ৪৫ হাজার টাকা ছিল যা জানতে পারেনি রণিত।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রণিতের এই খুনের ঘটনার পরই তাকে আড়াল করতে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে দিয়ে আসা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অবশেষে ঘটনার প্রায় ১৫ দিনের মাথায় আততায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হল পুলিশ। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বৃদ্ধকে খুন করে চলে যাওয়ার সময় রণিত গোরাচাঁদবাবুর মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রণিতের নামে এর আগে তেমন কোনো বড়সড় অভিযোগ না থাকলেও এলাকার কয়েকটি মোবাইল ফোন চুরির ক্ষেত্রে তার হাত রয়েছে।