রীতিমত ঝুঁকির অস্ত্রোপচার করে দেড় বছরের শিশুর ফুসফুসে আটকে যাওয়া একটি হাড়ের টুকরোকে বের করলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শনিবার সকালে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরামবাগ থেকে নিয়ে আসা হয় দেড় বছরের ওই শিশুকন্যা কুরিনা খাতুনকে। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ এবং বিপদমুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে শিশুটির দাদু ভাত খাচ্ছিলেন। সেই সময় ছোট্ট শিশুটি তাঁর পাশেই ছিল। হঠাৎই শিশুটি কিছু একটা খেয়ে ফেলে এবং রীতিমত শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে। দ্রুত শিশুটিকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। এই সময় অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে শিশুটির বাবা শিশুর মুখের ভিতর ক্রমাগত হাওয়া দিতে শুরু করেন। ওই অবস্থায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ইএনটি বিভাগে।

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন্ট ডা. গণেশ গাইন জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা দেখে তাঁরা দ্রুত হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহাকে গোটা ঘটনা জানান। এরপর ডেপুটি সুপারের উদ্যোগে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে শিশুটির অপারেশন শুরু করা হয়। অপারেশনের জন্য ডা. গণেশ গাইন ছাড়াও ছিলেন ডা. ঋতম রায় সহ চিকিৎসকদের একটি মেডিকেল বোর্ড।

ডা. গাইন আরও জানিয়েছেন, ব্রঙ্কোস্কোপি করে শিশুর হৃদযন্ত্রের বাম দিকে আটকে যাওয়া একটি হাড়ের টুকরো এবং তার সঙ্গে আরও কিছু ময়লা তাঁরা বার করেন। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ হলেও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই ধরণের দ্রুত অপারেশন একমাত্র গোটা রাজ্যের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই করা হল। রাজ্যের অন্য কোথাও এত দ্রুততার সঙ্গে এই ধরণের অস্ত্রোপচারের কোনো নজীর নেই। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে শিশুটির বাবার উপস্থিত বুদ্ধি এবং অসীম সাহসের জন্যই। তিনি যেভাবে একটানা শিশুটির মুখে মুখ লাগিয়ে হাওয়া দিয়ে গেছেন তার ফলেই শিশুটি জীবিত ছিল। নাহলে বড় কোন অঘটন ঘটতে পারত।

Like Us On Facebook