হুড়োহুড়ি করে একটিমাত্র সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পরে গিয়ে এবং পদপিষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হলেন প্রায় ১১জন রেলযাত্রী। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটল বর্ধমান স্টেশনের ৪ ও ৫ নং প্ল্যাটফর্মে। গুরুতর আহত ১১ জনকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও ৮ জনকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়ায় বর্ধমান স্টেশন এলাকায়। গোটা ৪নং প্ল্যাটফর্ম জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় যাত্রীদের জুতো।

জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল ৩টে ১০ নাগাদ ৪নং প্ল্যাটফর্মে কারশেড থেকে দেওয়া হয় পুরুলিয়া লোকাল ট্রেন। অন্যদিকে, ৩টে ১৪ নাগাদ ৫ নং স্টেশনে ঢোকে ডাউন পূর্বা এক্সপ্রেস। ৩টে বেজে ২০ মিনিটে পুরুলিয়া প্যাসেঞ্জার ছাড়ার ঘোষণা করা হয়। আর এরপরই শুরু হয় ব্যাপক হুড়োহুড়ি। ৪নং প্ল্যাটফর্মে ২টি সিঁড়ি থাকলেও একটি সিঁড়িতে চলমান সিঁড়ি বসানোর কাজ চলতে থাকায় সেই সিঁড়িটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে একটিমাত্র সিঁড়িই খোলা ছিল। আর সেই সিঁড়ি দিয়েই পূর্বার প্যাসেঞ্জাররা উঠতে যান, অন্যদিকে উপর থেকে প্যাসেঞ্জাররা নামতে থাকেন পুরুলিয়া লোকাল ধরার জন্য। ফলে প্রবল জটের সৃষ্টি হয় সিঁড়িতে। এই সময় ব্যাপক ঠেলাঠেলির জেরে সিঁড়ি থেকেই প্ল্যাটফর্মে আছড়ে পড়তে থাকেন প্যাসেঞ্জাররা। মুহূর্তের মধ্যে গোটা বর্ধমান স্টেশন আর্ত চিৎকারে ভরে যায়। হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকেই পদপিষ্ট হন। এরপরই সেখানে ছুটে আসেন রেলপুলিশ সহ স্টেশনের আধিকারিকরা। খবর পেয়ে বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহার নেতৃত্বে ছুটে যায় বর্ধমান থানার পুলিশ। ছুটে যায় সিভিক ভলান্টিয়াররাও। আহতদের দ্রুততার সঙ্গে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, এদিন যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন আসা যাওয়ার ঘোষণা করা হয়ে একেবারে অন্তিম সময়ে। ফলে প্রতিদিনই এই হুড়োহুড়ি হতে থাকে। যাত্রীদের পক্ষ থেকে বারবার রেল দফতরের কাছে জানানো সত্ত্বেও কোন সুরাহা হয়নি। যদিও এব্যাপারে বর্ধমান স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী জানিয়েছেন, যাত্রীদের এই অভিযোগ ঠিক নয়। এদিন অনেক আগেই পুরুলিয়া প্যাসেঞ্জারের ঘোষণা করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, সম্ভবত, কিছু যাত্রী পরে জানতে পারার জন্যই তাঁরা হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে পদপিষ্ট হবার মত কোন ঘটনার কথা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন। যদিও যাত্রীদের দাবি, এদিন কমপক্ষে প্রায় ১৪-১৫জন পদপিষ্ট হয়েছেন। তার মধ্যে শিশু ও মহিলারাও ছিলেন বলে দাবি।


Like Us On Facebook