বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জ চিলড্রেন্স কালচার সেন্টারের সুইমিং পুলে এক ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নামল সিবিআই। শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের ডিআইজি অভয় কুমার সিংয়ের নেতৃত্বে সিবিআইয়ের একটি দল আলমগঞ্জের কল্পতরু মাঠ সংলগ্ন সুইমিং পুলে তদন্তে আসেন। মৃত ছাত্রের বাবা, সুইমিং পুল সংস্থার কর্তা, কর্মী ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গেও কথা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে আলমগঞ্জ চিলড্রেন্স কালচার সেন্টারের সুইমিং পুলের জল থকে বর্ধমান শহরের আনন্দপল্লীর যুবক রমেন সামন্তর(২১) দেহ উদ্ধার হয়। তিনি বর্ধমান বিবেকানন্দ কলেজের ইংরেজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পরের দিন মৃত ছাত্রের বাবা দেবকুমার সামন্ত বর্ধমান থানায় তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে বলে আভিযোগ করেন। খুনে ছেলের বন্ধু-বান্ধব সহ সুইমিং পুল কর্তৃপক্ষ জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে সুইমিং পুলের কেয়ারটেকার ও প্রশিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তদন্তভার পায় সিআইডি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে রমেনের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়। ভিসেরা পরীক্ষায় পাকস্থলীতে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব মেলে। মদ খেয়ে সাঁতার কাটতে গিয়ে রমেনের মৃত্যু হয়েছে বলে রিপোর্ট দেয় সিআইডি। এরপর সিবিআই তদন্তের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন রমেনের বাবা দেবকুমার সামন্ত। তিনি হাইকোর্টে জানান, তাঁর ছেলে মদ খেত না। ভিসেরা রিপোর্টে পাকস্থলীতে বালি পাওয়ার কথা বলা হয়। সুইমিং পুলে বালি কিভাবে এল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপর রমেনের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এদিকে, ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পুজোর সময় বাইকে চেপে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় বর্ধমান শহরের তেজগঞ্জের যুবক কৌশিক রায়ের। শক্তিগড়ে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। একই দিনে বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জের অনুজ ভকতের দেহ উদ্ধার হয় হুগলির সিঙ্গুরে। দুর্ঘটনায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছিল সিআইডি। সেই দাবি মানতে চায়নি উভয় যুবকের পরিবার। উভয় পরিবার দাবি করেছিল তাঁদের একই জায়গায় খুন করে দেহ শক্তিগড় ও সিঙ্গুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরিচিত অনুজ ও কৌশিকের মৃত্যুর ব্যাপারে জেনে ফেলায় রমেনকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি রমেনের পরিবারের। অনুজ ও কৌশিকের মৃত্যুর ঘটনাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তিনজনের রহস্য মৃত্যুর পিছনে কোন যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
এদিন সিবিআইয়ের দল সুইমিং পুলের চারপাশ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। কর্তৃপক্ষ ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপশি সংস্থার বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখেন। এরপর সিবিআই দল শক্তিগড় ও সিঙ্গুরে যেখানে কৌশিক ও অনুজের দেহ উদ্ধার হয়েছিল সেই জায়গা দুটিও ঘুরে দেখেন।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?