১৯৬১ থেকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বর্ধমানে কাটিয়ে ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রবাদ প্রতীম পুরুষ পণ্ডিত ধ্রুবতারা যোশী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন নাগিনা মঞ্জিলেই তিনি ১৯৯৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ধ্রুবতারা যোশীর প্রতি সম্মান জানাতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন কোন উদ্যোগ নেয়নি বলে জানালেন তাঁর অন্যতম শিষ্যা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপিকা তাপসী ঘোষ। তাপসী ঘোষ জানিয়েছেন, ধ্রুবতারা যোশী যে বাড়িতে ছিলেন সেই নাগিনা মঞ্জিল এখন ধ্বংস হতে চলেছে। কিন্তু সেখানেই ধ্রুবতারা যোশীর প্রতি সম্মান জানাতে কোন সংগ্রহশালা বা গবেষণাগার তৈরি হতে পারত।
আগামী রবিবার বর্ধমান রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে গৌড়মল্লার সংস্থা আয়োজিত ধ্রুবতারা সঙ্গীত উৎসব ২০১৯। তৃতীয় বর্ষে পা দেওয়া এবারের উৎসবে ধ্রুবতারা যোশী স্মারক পুরস্কার দেওয়া হবে পদ্মশ্রী প্রাপ্ত বিশ্ববিখ্যাত সেতার বাদক ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খানকে। এই অনুষ্ঠানেই হাজির থাকবেন বিশিষ্ট কন্ঠশিল্পী পণ্ডিত ওংকার দাদকর, সরোদ বাদক পণ্ডিত অনিন্দ্য ব্যানার্জী, বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত শুভঙ্কর ব্যানার্জী, অশোক মুখার্জী, রূপক ভট্টাচার্য এবং বিশিষ্ট হারমোনিয়াম বাদক অনির্বাণ চক্রবর্তী প্রমুখ।
শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তাপসীদেবী জানিয়েছেন, ১৯৬১ সালে ধ্রুবতারা যোশী বর্ধমানে আসেন। এখানেই তিনি প্রথম সঙ্গীত অ্যাকাডেমী গড়েন। তারপর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনি পদ্মজা নাইডু মিউজিক কলেজ তৈরি করেন। তিনিই প্রথম ওই কলেজের অধ্যক্ষ হন। তাপসীদেবী জানিয়েছেন, এর আগেও তাঁরা বর্ধমান পুরসভার কাছে বর্ধমানের যে কোন একটি রাস্তার নাম ধ্রুবতারা যোশীর নামে করার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আজও তা পূরণ হয়নি। একইভাবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও তাঁরা তাঁর নামে একটি চেয়ার প্রফেসর করার আবেদন জানিয়েছিলেন তাও পূরণ হয়নি। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান সময়কালের প্রথিত যশা সঙ্গীত শিল্পীরা ধ্রুবতারা যোশীকে যে সম্মান জানান বর্ধমানে তাঁর জীবনকাল কাটালেও কার্যত আজও তাঁকে ব্রাত্যই করে রেখেছেন বর্ধমানবাসী। তিনি জানিয়েছেন, ফের তাঁরা এই দাবিকে সামনে রেখেই কর্মসূচি নেবেন তাঁদের সংগঠনের পক্ষ থেকে।