সাইবার ক্রাইমের অপরাধে গত তিন দিনে সাত ব্যাক্তিকে অন্ডাল থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল। কয়েকদিন আগে চার জনকে গ্রেপ্তার করার পর অন্ডাল থানার পুলিশ সোমবার আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে দুর্গাপুর আদালতে হাজির করল। ধৃতদের নাম চন্দন প্রসাদ, অজয় মাহাতো, গৌরী শঙ্কর প্রসাদ। এরা সকলেই আসানসোল, রানিগঞ্জ ও অন্ডালের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এই চক্রের সদস্যরা মূলত এটিএম জালিয়াতি, ভূয়ো মোবাইল সিম দিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহককে ফোন করে পিন নম্বর জেনে নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার মতো অপরাধ সংগঠিত করত।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দুর্গাপুরের ডিসিপি অভিষেক মোদী বলেন, ধৃতরা এটিএম জালিয়াতি, ভূয়ো মোবাইল সিম দিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের থেকে টাকা আত্মসাৎ সহ একাধিক সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যুক্ত। ধৃতদের সোমবার দুর্গাপুর আদালতে হাজির করা হয়। আদালত পুলিশের আবেদনে ধৃতদের দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পুলিশ ধৃতদের জেরা করে এই চক্রে আরও কারা যুক্ত তাদের ধরতে উদ্যোগ নেবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত তিন দিন আগে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অন্ডাল থানার পুলিশ নিমচা ফাঁড়ির সহায়তায় জেকে নগর এলাকা থেকে চারজনকে সাইবার ক্রাইমের অপরাধে আটক করে, পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে আন্তঃরাজ্য সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যুক্ত একটি চক্রের হদিস পায়। এরপর পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে অন্ডাল থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ অভিযুক্তদের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে। পরে তদন্তে নেমে অন্ডাল থানার পুলিশ ফের জেকে নগর এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু জাল নথি পত্র, ল্যাপটপ, মোবাইলের সিম কার্ড উদ্ধার করে এবং চন্দন প্রসাদ, অজয় মাহাতো, গৌরীশঙ্কর প্রসাদকে গ্রেপ্তার করে। এরা মূল চক্রীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করত বলে জানা গেছে।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, যে এই সাইবার ক্রাইমের দলটির বিভিন্ন সদস্যকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হত। কেউ ব্যাঙ্কের গ্রাহককে প্রলুব্ধ করে ফোন কলের মাধ্যমে, পরে তার অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য জেনে নিয়ে অপর এক সদস্য সেই গ্রাহকের টাকা নিজের মোবাইল ওয়ালেটে ট্রান্সফার করে নেয়। অন্য একজন সেই ওয়ালেটের টাকা দিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন সামগ্রী কিনে নেয়। চক্রের সঙ্গে যুক্ত কিছু দোকানদারকে এরা সেই সব জিনিস কমদামে বিক্রি করে নগদ টাকা তুলে নিত।
জানা গেছে, এই দলটির কয়েকজন রাজস্থানের একটি জায়গা থেকে এথিক্যাল হ্যাকার বা হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারের প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারের কজকর্ম করত। হ্যাকিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে এরা চক্রটি সুচারু ভাবে চালাত। এই চক্রের সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে আছে বলে মনে করছে পুলিশ।