রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়নের জন্য রীতিমত ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে সরকারী হাসপাতালগুলিতে। গড়ে তোলা হচ্ছে জেলায় জেলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। যদিও বিশেষজ্ঞদের অভিমত মেডিকেল পরীক্ষায় এ রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা তেমনভাবে সুবিধা করতে না পারার মূল কারণ তাদের সঠিক কোচিং এর অভাব। যেভাবে অন্য রাজ্যগুলি মেডিকেলের ফলাফল করে সেখানে এই রাজ্যেও ছেলেমেয়েদের সঠিক কোচিং দিলে তারা আরও ভাল ফল করতে পারবে। আর তাই, রাজ্যে চিকিৎসকের অভাব পূরণ করতে মেডিকেলের জন্য ছাত্রছাত্রীদের উন্নতমানের কোচিং দেবার উদ্যোগ নিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব।

শনিবার থেকে বর্ধমানের কৃষ্ণপুর হাইস্কুলে শুরু হল ১০০ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে এই কোচিং। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগ্রহীদের মধ্যে প্রায় ৪৫০জন আবেদন করেছিল এই বিশেষ কোচিং-এর জন্য। তাদের মধ্যে থেকে ১০০জনকে বাছাই করে শুরু হল সপ্তাহে শনি ও রবিবার ৮ ঘণ্টা করে এই প্রশিক্ষণ। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, দিল্লির ক্যাড নামক সংস্থার প্রশিক্ষকরা এই প্রশিক্ষণ দেবেন। থাকছে অডিও-ভিডিও মাধ্যম ছাড়াও সরাসরি দিল্লির ওই সংস্থার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।

ইতিমধ্যেই ফিজিক্স, কেমিষ্ট্রি, বায়োলজি প্রভৃতি বিষয়ের জন্য মোট ৬জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। গোটা প্রশিক্ষণ পর্বটাই ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হবে। প্রতিটি বিষয়ের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। কৃষ্ণপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমেন কোনার জানিয়েছেন, আগামী বছর এই ছাত্রছাত্রীরা মেডিকেলে বসবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই যেহেতু ২ মাস পিছিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হল, তাই বিভিন্ন ছুটির দিনেও সেই ক্ষতি পূরণের জন্য আলাদা ক্লাস নেবেন প্রশিক্ষকরা। জেলা সর্বশিক্ষা প্রকল্পের আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী জানিয়েছেন, জেলাশাসকের কথামতই এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে স্বপ্ন উড়ান। এ উড়ান ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার। স্বপ্ন, মেধা থাকলেও অনেকের সেই উড়ান থমকে যায় অর্থের অভাবে, সঠিক দিক নির্দেশের অভাবে। সেইসব স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করতেই এগিয়ে এসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। একশো পড়ুয়াকে মেডিকেলের সর্বভারতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করাই একমাত্র লক্ষ্য প্রশাসনের।

উল্লেখ্য, এতদিন ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রশিক্ষণের জন্য জেলার ছাত্রছাত্রীদের হয় কলকাতা নয় দুর্গাপুর যেতে হত। যা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। জেলাশাসক জানিয়েছেন, মেধা থাকলেও অর্থাভাব বা সঠিক গাইডেন্সের অভাবে অনেকেই থমকে যান। সেই উপলব্ধি থেকেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে এদিন হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু সহ অন্যান্য আধিকারিকরাও।


Like Us On Facebook