ফের মনুয়া কাণ্ডের ছায়া বর্ধমানে। বুধবারই সকালে বর্ধমানের মাধবডিহি থানার বর্ধমান-আরামবাগ রোডের নন্দনপুর ঢাল এলাকায় নয়ানজুলি থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছিল বস্তাবন্দি এক পুরুষ মৃতদেহ। আর তারপরেই তদন্তে নেমে পুলিশ বুধবার রাত্রেই প্রথমে মৃতের স্ত্রী এবং পরে প্রেমিককেও গ্রেপ্তার করল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হুগলীর গোঘাট থানার পানপাতা এলাকার বাসিন্দা খোকন মাঝি (৩৮) এবং তাঁর স্ত্রী তাপসী মাঝি ওই গ্রামের বাপ্পাদিত্য পানের বাড়িতে কাজ করত। বাপ্পাদিত্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ বিঘে জমি ছাড়াও পানপাতা বাজার এলাকায় একটি দোকানঘরও রয়েছে। তারও দেখভাল করত খোকন মাঝি। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই তাপসী মাঝির সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বাপ্পাদিত্যের। তা নিয়ে খোকন মাঝির সঙ্গে অশান্তিও চলছিল। এমনকি পাড়ার বাসিন্দারাও এই বিষয় নিয়ে খোকনকে কটাক্ষও করত। ফলে ক্রমশই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠছিল। ইতিমধ্যে দশমীর দিন সন্ধ্যায় বাপ্পাদিত্য খোকনকে বাজারে ডেকে নিয়ে গিয়ে মদ খাওয়ায়। এই সময়ই ফের তাপসী প্রসঙ্গ ওঠে। সেই সময় বাপ্পা খোকনকে মারধোর করে। তাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় খোকনের। মৃতদেহ সরাতে এরপর বাপ্পা খোকনের লুঙ্গি দিয়েই ঘাড়ের সঙ্গে হাত পা বেঁধে ফেলে। পরে একটি বস্তায় মৃতদেহ ভরে বস্তার মুখ সাইকেলের টিউব দিয়ে বেঁধে ফেলে খোকনের সাইকেলেই তা চাপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৬ কিমি দূরে মাধবডিহি থানার নন্দনপুর ঢালের কাছে নিয়ে আসে। কিন্তু নন্দনকুমার ঢালের কাছে কুকুর তাকে তাড়া করলে সেখানেই বস্তাবন্দি মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায় বাপ্পা। এদিকে, বুধবার সকালে বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধারের পর মৃতের শ্যালক দেবু রায় মাধবডিহি থানায় এসে মৃতদেহ সনাক্ত করে। অন্যদিকে, খোকনের হাতে উল্কিতে লেখা তাপসীর নাম দেখে তাকেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে তাপসী। স্বীকার করে বাপ্পার সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের কথা। এরপরই পুলিশ বাপ্পাদিত্যকে গ্রেপ্তার করে। উভয়েই খোকন মাঝিকে সরিয়ে ফেলার চক্রান্তের কথা পুলিশের
কাছে কবুল করেছে।