মাসকুলার ডিসট্রফি ডিজিজে ২০১১ সালে আক্রান্ত হয়েও উচ্চমাধ্যমিকে ৫৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করল বর্ধমানের বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিঙুটির বাসিন্দা অয়ন সোম। ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধীকতাকে নিয়েই রীতিমত লড়াই করেই অয়ন এই সাফল্য পেলেও ভবিষ্যতের পড়াশোনা নিয়েই চিন্তিত অয়ন। অয়নের বাবা অভিজিত সোম জানিয়েছেন, ২০১১ সালে অয়ন এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়। তার শরীরের নিম্নাংশ ক্রমশই অসাড় হতে থাকে। ফলে তার চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়। রীতিমত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার পড়াশোনাও। পরে তালিত গৌড়েশ্বর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বদান্যতায় এই স্কুল থেকেই সে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য সে নিয়মিত স্কুল যেতে না পারলেও বাবা সহ কয়েকজন শিক্ষক তাকে ভীষণ রকম সাহায্য করেছে। উচ্চ মাধ্যমিকে অয়ন পেয়েছে বাংলায় ৫৬, ইংরাজীতে ৫৭,এডুকেশনে ৪৫, ইতিহাসে ৬০ ও দর্শনে ৬০। সংস্কৃতিতে পেয়েছে ৪২। মোট ২৭৮ পেয়েছে অয়ন। গ্রাজুয়েশনে দর্শন নিয়ে অনার্স পড়ার ইচ্ছা থাকলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতাই তার প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় তাকে সাধারণ পাস কোর্সেই পড়তে হবে বলে জানিয়েছে। ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও অয়ন মনে করছে সেই স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে তার। খারাপ লাগে যখন তার বন্ধু বান্ধবরা ছোটাছুটি করে, খেলা করে তখন সে ঘরে বসে থাকে। কারও সাহায্য ছাড়া সে চলাফেরাই করতে পারেনা।
উল্লেখ্য, অয়ন মাসকুলার ডিসট্রফি জাতীয় জেনেটিক অসুখে আক্রান্ত। এই অসুখে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। অয়নের লড়াই দু’ধরণের, একদিকে তার শারিরীক অক্ষমতা অপরদিকে মায়ের স্নেহ ও অনুপ্রেরণা থেকে বঞ্চিত। ঠাকুরমা, বাবা ও কাকার কাছেই বেড়ে ওঠা।