মাত্র ১৮ দিনের শিশুর করোনা জয়। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেলায় মৃত্যুর হার বেড়েছে। তবে, আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন কমছে। ১০ দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর একরত্তির কোভিড জয় করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে। করোনা আক্রান্ত শিশুকে সুস্থ করে নজির গড়ল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হয়ে উচ্ছ্বসিত হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান তথা কোভিড নোডাল অফিসার ডা. কৌস্তভ নায়েক বলেন, ‘হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত সদ্যোজাতদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানে আরও ২টি শিশু রয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে কোন শিশুর মৃত্যু হয়নি। এই শিশুটির অবস্থা খুব জটিল ছিল। সেখান থেকে শিশুটিকে সুস্থ করা চিকিৎসকদের একটা সাফল্য বটে। এই সাফল্য হাসপাতালের চিকিৎসকদের উজ্জীবিত করবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে সদ্যোজাতের বাড়ি। গত ১৯ এপ্রিল শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুটির নার্ভের সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসার জন্য পরিবারের লোকজন শিশুটিকে বীরভূমের রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ২৪ এপ্রিল শিশুটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। স্থানান্তরের পর শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ২৭ এপ্রিল তার কোভিড টেস্ট করানো হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরই মধ্যে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা শিশুটিকে ভেন্টিলেটর সাপোের্ট রাখার সিদ্ধান্ত নেন। ভেন্টিলেশনে ১০ দিন থাকার পর শিশুটি সুস্থ হয়। ফের তার করোনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরীক্ষায় ফুসফুসের সংক্রমণও সেরে গিয়েছে বলে জানা যায়। নার্ভের চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে বর্ধমানের বামবটতলার অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে দেখানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পরিবারের লোকজনকে। হাসপাতালের শিশুবিভাগের চিকিৎসক তারকনাথ ঘোষ বলেন, কোভিড থেকে শিশুদের সেরে ওঠার নজির রয়েছে। কিন্তু, এই শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত জটিল ছিল। শিশুটিকে সুস্থ করে তোলা আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসকদের বড় সাফল্য। শিশুটি এখন কোভিড মুক্ত। চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ ও স্বাস্থ্য কর্মীদের চেষ্টায় এই সাফল্য এসেছে।