ফের সক্রিয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালচক্র। ১০০ টাকার বিনিময়ে ঘুরপথে সরকারি হাসপাতাল থেকেই করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল ইউএসজি। ঘুরপথে টাকার বিনিময়ে ইউএসজি করিয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক ব্যক্তি। রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ফাঁদ পাতেন হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আব্দুল নাসির খান। তাতেই মেলে সাফল্য। হাতেনাতে টাকা নেওয়ার সময় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনা।

পুলিশ ও রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের রাইপুর কাশিয়াড়া এলাকার বাসিন্দা তুলা ধাড়া তাঁর ১১ বছর বয়সী মেয়েকে অসহ্য পেটে যন্ত্রনা নিয়ে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসেন। শিশুবিভাগে টিকিট করানোর পর তিনি তাঁর মেয়েকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে ইউএসজি করানোর পরামর্শ দেন এবং হাসপাতালেরই কাগজে তা লিখে দিয়ে ৬ নং ঘরে যেতে বলেন। সেখানে কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার পর তুলাদেবীকে আগামী ১৭ জানুয়ারি ইউএসজি করার তারিখ দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়ের অসহ্য পেটে যন্ত্রনার কথা বলে তাড়াতাড়ি ইউএসজি করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। কি করবেন বুঝতে না পেরে তিনি যখন দিশাহারা, সেই সময় এক ব্যক্তি তাঁর কাছে আসেন এবং আজই ইউএসজি করিয়ে দেওয়া হবে বলে বিনিময়ে টাকা চান।

এরপরই তুলা ধাড়া বিষয়টি হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে জানান। তাঁর কাছ থেকে এই অভিযোগ পেয়ে আব্দুল নাসির খান তুলাদেবীকে ১০০ টাকার নোটে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে ওই দালালকে দেওয়ার পরামর্শ দেন। অন্যদিকে, পুলিশ কর্মীদের গোপনে তাঁকে অনুসরণ করার নির্দেশ দেন। আর যথারীতি তুলাদেবী পুলিশের কথামত সেই দালালের হাতে টাকা দিতেই হাতেনাতে তাকে পাকড়াও করেন পুলিশ কর্মীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত ব্যক্তির নাম রবিউল ইসলাম মল্লিক। তাঁর বাড়ি গলসি থানার পুরশা গ্রামে। বর্ধমান হাসপাতালের সুপার তাপস কুমার ঘোষ জানান, এইরকম একটা অভিযোগ এসেছিল। তার ভিত্তিতে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর বাইরেও একটি অন্তর্বর্তী তদন্ত কমিটি গঠন করে এর সাথে আর কারা কারা যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও দালালচক্র নির্মূল করতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক প্রচার ও রোগীর পরিজনদের সচেতন করার কাজ চলছে।

Like Us On Facebook